পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় এক বাঙালি পর্যটকের মৃত্যু হল। মঙ্গলবার রাতের দিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে বিতান অধিকারী নামে ওই বাঙালি পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর স্ত্রী'র সঙ্গে ফোনেও কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, 'আজ জম্মু ও কাশ্মীরে পর্যটকদের উপরে যে ভয়ংকর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনায় হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। মৃতদের মধ্যে এক ব্যক্তি বিতান অধিকারী পশ্চিমবঙ্গের ছেলে। তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। যদিও এই শোকের মুহূর্তে সান্ত্বনা জানানোর কোনও ভাষা নেই, তাও আমি আশ্বাস দিয়েছি যে কলকাতার বাড়িতে বিতানের মরদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকার সবরকমের পদক্ষেপ করছে।'
আমেরিকায় থাকতেন বিতান, ঘুরতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে
সূত্রের খবর, কর্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় কাজ থাকতেন বিতান। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, পাটুলির ফ্ল্যাটে বিতানের স্ত্রী এবং তিন বছরের ছেলে থাকতেন। গত ৮ এপ্রিল আমেরিকা থেকে ফিরেছিলেন যুবক। আর গত ১৬ এপ্রিল স্ত্রী এবং ছেলের সঙ্গে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আগামী বৃহস্পতিবার তাঁদের কলকাতায় ফেরার কথা ছিল। আজ দুপুরের দিকেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছিল।
‘আমি কীভাবে বাঁচব?’, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজন
কিন্তু রিসর্ট টাউন পহেলগাঁওয়ের কাছে অবস্থিত বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কথা বলতে পারছেন না। বিতানের মামার ছেলে বারবার বলছেন যে ‘আমি কীভাবে বাঁচব?’ তারইমধ্যে এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, বিতানের বৃদ্ধ বাবা এবং মা'কে এখনও ছেলের মৃত্যুর সংবাদ দেওয়া হয়নি। কিন্তু সেই কথাটা কীভাবে বলবেন, তা ভেবে উঠতে পারছেন না কেউ।
কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা সায়নীর
আর সেই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন যাদবপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সায়নী ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরে জঙ্গিহানায় নিহত বিতান অধিকারী। ফ্লোরিডাবাসী বিতানের বাড়ি টালিগঞ্জ ১০০ ওয়ার্ড অন্তর্গত বৈষ্ণবঘাটায়। আমরা আহত, মর্মাহত। ভারত সরকারের উত্তর চাই। এই ঘটনার দায়ভার নেওয়া উচিত ভারত সরকারের। আজ যা ঘটল, তা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেছিলেন যে জম্মু ও কাশ্মীরে সব ঠিক আছে, সেটার অর্থ কি এটাই ছিল?’
সেইসঙ্গে যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী খবর নিচ্ছেন। যা যা করণীয়, সেইমতো রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করবে। কেন্দ্রীয় সরকার এই মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না। এই প্রাণহানির জন্য দায়ি মোদী সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে।'