সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার প্রতারণার ঘটনা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন। ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের এই যুগে প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ প্রতারিত হচ্ছেন, কখনও ডিজিটাল অ্যারেস্ট, কখনও ফেক লিংকে ক্লিক করে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়ানোর ঘটনা সামনে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও তৎপর হল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: অনলাইনে কয়েক কোটির 'প্রতারণা', ইডির জালে শিলিগুড়ির যুবক, মধ্যরাতেই বসল আদালত
সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছে। এখন থেকে যেকোনও ব্যক্তি ১৯৩০ নম্বরে ফোন করে এমন প্রতারণার অভিযোগ জানাতে পারবেন। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে এই নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। বৃহস্পতিবার বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা জানান রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, অন্য রাজ্য থেকে যদি কেউ এই নম্বরে ফোন করেন, তবে সেই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমে কোনও অ্যাকাউন্ট ভুয়ো হলে, সেই অভিযোগ সরাসরি সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছেই জানাতে হবে। কারণ, রাজ্য সরকারের হাতে এই সংস্থাগুলোর তথ্য থাকে না। ‘মেটা’র মতো সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে না, ফলে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এমনটাই জানান মন্ত্রী।
নিজের অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়ে বাবুল বলেন, তাঁর নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রায় ২৯-৩০টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে। এগুলির বেশিরভাগের খবর তিনি নিজেই জানেন না। এমনকি ইউটিউবেও তাঁর নামে একটি চ্যানেল রয়েছে, যার ফলোয়ার সংখ্যা ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়েছে। অথচ সেটি তাঁর নিজস্ব চ্যানেল কি না, তা প্রমাণ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে।এই প্রসঙ্গে বিধানসভায় মন্ত্রী আরও বলেন, সাধারণ মানুষ এই ধরনের প্রতারণার শিকার হলে যাতে সহজেই আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন, সে জন্যই এই নম্বর চালু করা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে এই পরিষেবা সম্পর্কে সচেতন করা হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে একাধিক ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ এবং অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ বিগত কয়েক মাসে দফায় দফায় উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষ ভুয়ো পুলিশ, আদালত বা আর্থিক সংস্থার পরিচয়ে ফোন পেয়ে প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন বারবার। এমন আবহে এই ১৯৩০ নম্বর নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা