দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন নিয়ে আজ, বুধবার নবান্নে প্রস্তুতি বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকে একাধিক মন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। আর মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে একাধিক আমলা এই বৈঠকে যোগ দেবেন। তবে রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারা উপস্থিত থাকবেন কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। আগামী ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দ্বারোদঘাটন হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের। পাশাপাশি আজ সকালেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের ইমাম–মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে ইমাম–মোয়াজ্জেমদের কথা শোনার পর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের বক্তব্য তুলে ধরবেন। আজ বিকেলেই দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন নবান্নে। সুতরাং সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আজ, বুধবারের দু’টি বৈঠকই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ইমাম–মোয়াজ্জিনদের সঙ্গে বৈঠক মূলত রাজ্যে কেমন করে শান্তি বজায় রাখতে হবে, সেটি নিয়ে। কারণ, ওয়াকফ বিল নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের জেরে মুর্শিদাবাদ–সহ নানা এলাকায় একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হস্তক্ষেপে মুর্শিদাবাদে এখন শান্তি ফিরেছে। গ্রেফতার হয়েছে প্রচুর।
আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্রসংঘ থেকে বাহিনী এনে ভোট করালেও ফলাফল একই হবে’, শুভেন্দুকে খোঁচা কুণালের
অন্যদিকে আগামী ৩০ এপ্রিল জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্দিরের নিরাপত্তা, সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা হবে বৈঠকে। মন্দির উদ্বোধনের পর বহু মানুষ দিঘায় যাবেন ধরে নিয়ে যানবাহনের ব্যবস্থা, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা–সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। মন্দির পরিচালনা থেকে শুরু করে উদ্বোধনে আমন্ত্রিতের তালিকা নিয়েও আজকের বৈঠকে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর। ইমামদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের বার্তাই দিতে চান যে, ওয়াকফ আইন এই রাজ্যে কার্যকর হবে না। যে আইন কার্যকর হবে না সেটা নিয়ে বিক্ষোভ কেন? ইমাম–মোয়াজ্জেমদের কাছে সহযোগিতা চাইবেন মুখ্যমন্ত্রী। ইমামদের পক্ষ থেকে সবার কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করা হয়েছে।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী ২৭ তারিখ দিঘায় যাবেন বলে সূত্রের খবর। ২৮ এপ্রিল তিনি ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে বাংলার সম্প্রীতির ছবিটাও তুলে ধরতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজকের বৈঠকে সমাজের নানা স্তরের মানুষকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে নবান্ন সভাঘরে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীর লন্ডন সফরে যাওয়া প্রতিনিধিরাও। তবে আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওয়াকফ আইনটি সম্পর্কে রাজ্য সরকারের বক্তব্য বুঝিয়ে বলবেন। বাংলায় আইন কার্যকর করা হবে না বলে গত সপ্তাহে স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি কেন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল? সেটার কারণ অনুসন্ধানে রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় কিনা সেটাই দেখার।