হাতে আর একটি বছর। তারপরই বাংলায় ‘হাইভোল্টেজ’ বিধানসভা নির্বাচন। এবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে নির্বাচন করা হোক। এই দাবি করার সঙ্গে সঙ্গে তার জবাব দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এখন মুর্শিদাবাদ জেলার নানা প্রান্তে ওয়াকফ বিলের বিরোধিতায় অগ্নিগর্ভ বাতাবরণ তৈরি হয়। যা ঠাণ্ডা করতে নেমে পড়েন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং আধা সামরিক বাহিনী। এখন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন দক্ষিণবঙ্গের পুলিশ কর্তা সুপ্রতিম সরকার।
এদিকে মুর্শিদাবাদের সুতি, সামসেরগঞ্জ, ধূলিয়ান, জঙ্গিপুরে ভেঙেছে বাড়ি, পুড়েছে দোকান, লুঠপাট, মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। যা আজ, সোমবার থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট করে বলেন, ‘পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলছি না আমরা। গণতন্ত্রকে সুষ্ঠভাবে প্রতিষ্ঠা করতে এবং ভোটারের নিরাপত্তা রক্ষার জন্যই রাষ্ট্রপতি শাসন দরকার। রাষ্ট্রপতি শাসনে আগামী বিধানসভা নির্বাচন না হলে, সেখানে হিন্দুরা ভোটই দিতে যেতে পারবেন না।’ পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘অভিযোগ আসছে, সীমান্ত থেকে বিএসএফের একাংশের সহযোগিতায় কিছু দুষ্কৃতী বাংলায় ঢুকেছে। যারা এই গন্ডগোল ঘটিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাও যাদের চিনতে পারছেন না। এটা স্পষ্ট ষড়যন্ত্র।’
আরও পড়ুন: দুধে ভেজাল থাকার অভিযোগে গ্রেফতার তিনজন, নেপথ্যে কোন চক্র? আলোড়ন হুগলিতে
অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব ছবি পোস্ট করা হয়েছে সেগুলি বাংলার বলে দাবি করা হয়েছে। সেখানে প্রত্যেকটি ছবি যে বাংলার নয়, ভিন রাজ্যের তা ফাঁস করে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই আবহে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘রাষ্ট্রপতি শাসনে যদি ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া ভোট না করে তাহলে ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী, মিনাখাঁ, হাড়োয়া, জলঙ্গী, রানিনগর, সুতি, সামশেরগঞ্জ, কালিয়াচক থেকে দিনহাটা, কলকাতার মেটিয়াবরুজ বন্দর, ফলতা, মগরাহাট–সহ পঞ্চাশের বেশি বিধানসভা কেন্দ্র আছে যেখানে শতাংশের বিচারে হিন্দুরা ৫০–এর কম। সেখানে হিন্দুদের ভোট দিতে দেওয়া হবে না।’
শুভেন্দু অধিকারীর সমস্ত কথার জবাব আজ দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। কুণালের কথায়, ‘২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। ফলাফল সবার জানা। ২০২৪ সালেও লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন কমেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়েছে। ২০২৬ সালে রাষ্ট্রপতি শাসন কেন, পারলে রাষ্ট্রসংঘ থেকে বাহিনী নিয়ে এসে ভোট করতে বলুন। ফলাফল একই হবে। চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুৎসা, ষড়যন্ত্র যতই করুক লাভ হবে না। তবে এই ষড়যন্ত্রের পিছনে বড় কোনও প্লট আছে। যার জন্যই ওরা বলতে পারছে এরপর ওমুখ জায়গায় গোলমাল হবে, তমুখ জায়গায় গণ্ডগোল হবে।’