কোপ পড়ল ট্রেনের হকারিতে। চলন্ত ট্রেনে হকার উঠায় রাশ টানতে আরও কড়া পদক্ষেপ নিল আরপিএফ। আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন ট্রেনের হকাররা। চলন্ত ট্রেনে হকার উঠলে, দায়ী করা হবে সংশ্লিষ্ট পোস্ট ইন্সপেক্টরকে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে আরপিএফ। এই নির্দেশ ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে আরপিএফ মহলে।শনিবার হাওড়া ডিভিশনের আরপিএফের সিনিয়র কমান্ডেন্ট প্রত্যেকটি পোস্ট ইন্সপেক্টরকে একটি লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছেন। সেই নির্দেশের স্পষ্ট বলা হয়েছে, চলন্ত ট্রেনে যদি কোনও হকার ওঠেন, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পোস্ট ইন্সপেক্টরকে এর জন্য দায়ী করা হবে। ধরে নেওয়া হবে হকার ওঠার পেছনে তাঁরই মদত রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে হাওড়ার বরিষ্ঠ আধিকারিক অজয় প্রকাশ জানিয়েছেন, রেলস্টেশন চত্বরে হকারি করা বেআইনি। এর জন্য রেলের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু তার সত্ত্বেও হকাররা জোরজবস্তি ব্যবসা করে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বহু রেলযাত্রীদের অভিযোগ আসছে যে, তাঁদের উপর হকাররা অত্যাচার করছেন। সে কারণে হকারদের ট্রেনে ওঠা রোধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’তিনি আরও জানিয়েছেন, অ্যান্টি হকিং স্কোয়ার্ডের কর্মীদের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১২ জন থেকে বাড়িয়ে ৫০ জন করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এই অ্যান্টি হকিং স্কোয়ার্ডকে কাজে নামানো হয়নি। হকার রোধ করতে যদি পোস্ট ইন্সপেক্টররা ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে এই স্কোয়ার্ড নামানো হবে বলে আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে।যদিও আরপিএফের এই নির্দেশিকা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি। তাঁরা হকারদের অত্যাচারের বিষয় মানতে রাজি হননি। এই প্রসঙ্গে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘লকডাউনের কোপে পড়ে এমনিতেই হাজার হাজার হকারকে অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তার ওপর এমন ফরমান কখনও মেনে নেওয়া যায় না। রেল পুলিশের এই নীতির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন গড়ে তুলব।’একই কথা জানিয়েছেন হাওড়া শহর আইএনটিটিইউসির সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ মজুমদার। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘রেল যদি খেতে-না পাওয়া মানুষগুলোকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে, তাহলে আমরাও ট্রেন অবরোধ করে এর জবাব দেব।’ এই মুহূর্তে রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ। হাওড়া ডিভিশনে হাতেগোনা কয়েকটি প্যাসেঞ্জার, মেল ও স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে। ফলে হকারদের অত্যাচার নিয়ে রেলের অভিযোগ মানতে নারাজ আইএনটিটিইউসি।স্বাভাবিকভাবেই এই নির্দেশকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে আরপিএফ কর্মীদের মধ্যেও। কারণ, ট্রেনে মধ্যে হকার ওঠা আটকাতে গেলে তাঁদের আরও সক্রিয় হতে হবে। এর জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। গত ১৭ অগস্ট আচমকাই ব্যান্ডেল শাখা হকারদের ধরপাকড় শুরু করে আরপিএফের একটি বিশেষ দল। ঘটনার দিনে বৈঁচিগ্রামে আরপিএফ কর্মীদের ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। ঘটনায় অভিযুক্ত ৭ জন হকারকে গ্রেফতার করে আরপিএফ।