আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়েছেন। ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে হেলিকপ্টারে করে মুর্শিদাবাদ যান তিনি। এই জেলাতেই ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে কদিন আগে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে। তবে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আর তাই সেখানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি অশান্তির বিরুদ্ধে বলে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। তিনদিনের মুর্শিদাবাদ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন।
আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদের অশান্তি এবং হিংসা করা হয়েছে পরিকল্পনা করে বলে সর্বসমক্ষে জানিয়ে দেন। প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকে নিশানা করেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার কাছে খবর আছে, ওড়িশায় আমাদের রাজ্যের শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে বাংলায় কথা বলেছে বলে তাঁদের মারা হয়েছে! কেন হবে এটা? বাংলায় কথা বলা কি দোষের? শুধু ওড়িশায় নয়, বিহার, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রেও বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। এই সমস্ত রাজ্যের সরকারের উদ্দেশে বলছি, এসব বন্ধ করুন। স্বরাষ্ট্রসচিবকে বলেছি বিষয়টা নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলতে। ইতিমধ্যেই ডিজি ওড়িশার ডিজির সঙ্গে কথা বলেছেন।’
আরও পড়ুন: রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি, কলকাতা হাইকোর্টে বিজেপি
মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছেন। আর ক্ষতিপূরণও দিতে চান। সকলের পাশে থাকার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর ভিনরাজ্যে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠেছে। মারধর, হামলা, লুটপাট, উপার্জন কেড়ে নেওয়া, পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘জগন্নাথধাম করেছি খুব গায়ে লেগেছে। জগন্নাথধাম নিয়ে এত হিংসা কেন? যখন আলুর টান পড়ে তখন বাংলা আলু জোগায়। ঘূর্ণিঝড়ে আপনাদের সাহায্য করি। ওড়িশায় বাংলায় কথা বললেই মারছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের মারছেন। আমরা তা করব না। আমি না করলেও হিংসুটে লোকের অভাব নেই। ওড়িশা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের সরকারকে আজ চিঠি পাঠাচ্ছেন মুখ্যসচিব। দয়া করে শকুনি মামা হবেন না।’
পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্ধার করা থেকে শুরু করে তাঁদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কড়া চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং লোকসভার সাংসদ ইউসুফ পাঠান। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘প্লিজ সেভ ইন্ডিয়া অ্যান্ড নট ডার্টি পলিটিক্স। আমাদের এখানেও কিন্তু দেড় কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন ধর্মের। মনে রাখবেন, আপনারা অত্যাচার করেন। আমরা করি না। এটাই আমাদের আর আপনাদের মধ্যে তফাৎ। তাই বলছি, হিংসার তাস তুলে দেবেন না কারও হাতে। আমরা আপনাদের রাজ্যের শ্রমিকদের সুরক্ষিতই রাখব, কিন্তু কোথাও যদি কোনও সমস্যা হয়, কোনও বিশেষ সংগঠনের সদস্য এসে যদি তাঁদের হুমকি দেয়, সেই দায়িত্ব কিন্তু আমি নিতে পারব না।’