খরচ বহন করতে না পেরে অনেক রোগী মাঝপথে থামিয়ে দেন ক্যানসারের চিকিৎসা। আবার অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যন্ত এলাকার রোগীদের পরিবহণের খরচ বহন করার সামর্থ্য থাকে না। ফলে তাঁরাও একইভাবে মাঝপথে চিকিৎসা থামিয়ে দেন। সেই কথা মাথায় রেখে ৬ বছর আগে ক্যানসার রোগীদের জন্য বিনামূল্যে সরকারি বাসে পরিবহণের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য সরকার। তাতে জানানো হয়েছিল, ক্যানসার এবং থ্যালাসেমিয়ার মতো মারণ রোগে আক্রান্তরা বিনামূল্যে সরকারি বাসে যাতায়াত করতে পারবেন। কিন্তু, সরকারি সেই নির্দেশিকার কথা জানেন না সিংহভাগ রোগী এবং চিকিৎসক। ফলে তাঁরা এই সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। (আরও পড়ুন: ওয়াকফ হিংসার জেরে ঘরছাড়াদের অধিকাংশ এখনও মালদা-ঝাড়খণ্ডে, কেমন আছে মুর্শিদাবাদ?)
আরও পড়ুন: ‘ওর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত হল…', ৪ বছরের ছেলের ক্যানসার, লুকিয়ে কাঁদতেন ইমরান
প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কলকাতার হাসপাতালগুলিতে আসা বিভিন্ন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের দাবি, তাঁরা সরকারি এই নির্দেশিকা সম্পর্কে জানেন না। বহু চিকিৎসকও এমন দাবি করছেন। ক্যানসার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলির বক্তব্য, বহু রোগী আছে যারা পরিবহণের খরচ বহন করতে না পেরে মাঝপথে চিকিৎসা থামিয়ে দিচ্ছেন। সংগঠনের বক্তব্য, বড় বড় হাসপাতাল বা জেলা সদর হাসপাতালগুলিতে সরকারি এই নির্দেশিকা দেওয়া থাকলে রোগীদের সুবিধা হয়। কিন্তু, এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা হাসপাতালে চোখে পড়ে না। সূত্রের খবর, বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্যানসার আক্রান্ত রোগী মাঝপথে চিকিৎসা থামিয়ে দিচ্ছেন। যার মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও রয়েছে। শিশুদের চিকিৎসা যাতে মাঝপথে বন্ধ না হয় তার জন্য শহরের তিনটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ‘সহায়তা ডেস্ক’ চালু করেছে শিশুদের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করা সংগঠন লাইফ বিয়ন্ড ক্যানসার। তাদের বক্তব্য, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বহু ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর নিয়মিত চিকিৎসার জন্য আসতে না পারার মূল কারণ হল পরিবহণের খরচে বহন করতে না পারা। ফলে সরাসরি সেই নির্দেশিকা নিয়ে প্রচার করা প্রয়োজন। (আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে 'প্রতিশোধ' নিতে গিয়ে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারল বাংলাদেশ?)
সাধারণত স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে ক্যানসার রোগের চিকিৎসা বিনামূল্যে বেসরকারি হাসপাতালেও হয়ে থাকে। তবে যাতায়াতের খরচ বহন করতে পারাটা দরিদ্র রোগীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় এই রোগে আক্রান্তদের নির্দিষ্ট কার্ড থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বিভিন্ন সংগঠন।এবিষয়ে আবার এক চিকিৎসকের বক্তব্য, ক্যানসার রোগীরা একা হাসপাতালে আসতে পারেন না। ফলে শুধু ক্যানসার আক্রান্ত নয়, তাঁদের আসা একজন আত্মীয়ের ভাড়াও মুকুব করা প্রয়োজন। (আরও পড়ুন: লাগাতার ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস, জারি সতর্কতা, বৈশাখের শুরুতে কেমন থাকবে আবহাওয়া?)
আরও পড়ুন: সৌরভকে নবান্ন অভিযানে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে থানায় যেতে হল চাকরিহারা শিক্ষকদের
উল্লেখ্য, পরিবহণ দফতর নির্দেশিকা জারি করেছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু, সেই নির্দেশিকা বেশি প্রচারের আলোয় না আসায় সমস্যা হচ্ছে। এবিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এনিয়ে কীভাবে আরও বেশি করে প্রচার করা যায় তা দেখা হচ্ছে। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ক্যানসার রোগীরা উপযুক্ত নথি দেখালে যাতে তাঁদের বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয় সেবিষয়ে আধিকারিকদের ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। একইসঙ্গে, প্রচার বাড়ানো নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে বলেও তিনি জানান।