আরজি কর কাণ্ডে দুর্নীতিতে তাঁর বিরুদ্ধেও উঠতে শুরু করেছে অভিযোগ। এহেন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে এবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। উল্লেখ্য, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের কল্যাণ সমিতিরও সভাপতি ছিলেন সুদীপ্ত। এই আবহে মেডিক্যালের পড়ুয়া সংগঠন 'মেডিক্যাল কলেজ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন' অভিযোগ করেছে, ল্যাবরেটরিতে দুর্নীতি হয়েছিল সুদীপ্ত রায়ের নির্দেশে। বর্তমান প্যাথলজিস্ট জয়ন্ত ঘোষ জড়িত ছিলেন বলেও অভিযোগ। এছাড়া টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের শয্যা বিক্রির অভিযোগও তুলেছেন পড়ুয়ারা। দাবি করা হচ্ছে, হাসপাতালের ল্যাবরেটরির জন্য সরকার যে টেস্ট-কিট বরাদ্দ করেছে, তা নিজেদের নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করেছে আশপাশের বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলি। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের 'ফ্রি' শয্যা রোগীর পরিবারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'কট্টরপন্থার বীজ বপণ করার কর্মফল ভোগ করছে পাকিস্তান', পড়শিকে বিঁধলেন জয়শংকর)
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের অনুমতি পেল রিলায়েন্স, এবার বদলে যাবে ভারতে ক্রিকেট দেখার অভিজ্ঞতা?
এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের চিকিৎসক-বিধায়কের বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ নাগাদ সিঁথিতে সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে হাজির হয় তদন্তকারীদের একটি দল। প্রায় তিন চার ঘণ্টা ছিল সিবিআইয়ের দল। রাত ১১টা নাগাদ বেরিয়ে যায় তারা। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে। সেদিন প্রায় ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে। (আরও পড়ুন: পুজোর আগে বাড়ল কর্মীদের বেতন, সরকারি তালিকা ধরে জানুন কাদের পকেটে ঢুকবে কত)
আরও পড়ুন: বেতন বাড়ল কয়েক হাজার, পুজোর মুখে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পকেট ভরাল মমতার সরকার
তার আগে আবার আরজি কর দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ৬ জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেদিন তৃণমূল বিধায়ক তথা আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির সদ্য প্রাক্তন সভাপতি ডঃ সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। এছাড়া উত্তর কলকাতায় তাঁর নার্সিংহোমেও তল্লাশি চলে। পাশাপাশি হুগলির দাদপুরের দাঁড়পুর গ্রামে সুদীপ্ত রায়ের বাংলোতেও ইডি অভিযান চালায়। এছাড়াও বালিগঞ্জে এক ওষুধ ব্যবসায়ীর বাড়িতে পৌঁছায় ইডি। সেই ব্যবসায়ীর নাম সন্দীপ জৈন। সেদিনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁর বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। সুদীপ্তর সিঁথির নার্সিংহোমেও চলে তল্লাশি অভিযান। পরে তাঁকে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সেও ডাকা হয়। সিবিআই-ইডি ও স্টেট ভিজিল্যান্স কমিটিতে লিখিত অভিযোগও জমা পড়ে সুদীপ্ত রায়ের নামে। সেন্ট্রাল ল্যাব, কার্ডিওলিজর মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, নার্স নিয়োগে সুদীপ্ত রায় প্রভাব খাটাতেন বলে অভিযোগ করা হয়। (আরও পড়ুন: পুজোর আগে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, চাল রফতানির ওপর থেকে উঠল নিষেধাজ্ঞা)
আরও পড়ুন: বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, উৎসবের মরশুমে বাড়ছে ন্যূনতম বেতন, ডিএ বৃদ্ধি ৩.২%
আরও পড়ুন: রবিবাসরীয় বাজার মাতাবে পদ্মার ইলিশ, আরও রুপোলি শস্য এল ভারতে, দাম কত জানেন?
প্রসঙ্গত, আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতে আরজি কর দুর্নীতি নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের কাঁধে চাপিয়েছিল উচ্চ আদালত। তবে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডিও তদন্তে নেমেছে। এদিকে এই দুর্নীতি মামলায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁকে দফায় দফায় জেরা করছে সিবিআই। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ১২ সেপ্টেম্বর সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তৃণমূল বিধায়ককে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। আর এরপর সম্প্রতি সুদীপ্ত রায়ের বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি। এরপর সেই সুদীপ্তকে ইডি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে জেরা করার জন্যে। জানা গিয়েছে, আরজি করে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েই সুদীপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাঁর মেয়েকেও জেরা করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এদিকে সিবিআই অভিযান শেষে সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন, তিনি তদন্তকারী আধিকারিকদের সবরকম ভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা জারি রাখবেন। এদিকে উত্তরবঙ্গ লবির দুই নেতা অভীক ও বিরূপাক্ষ সম্পর্কে কিছু বলতে অস্বীকার করেছিলেন। এদিকে গত ৯ অগস্ট সকালে ফোনে কথা সন্দীপের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল বলে মেনে নিয়েছেন সুদীপ্ত রায়।