সূত্রের খবর, বাংলার সরকারকে আর্থিকভাবে অবরুদ্ধ করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। তাই টাকা আটকে রাখার পাশাপাশি আর্থিক বোঝাও চাপিয়ে দিতে চাইছে। ইতিমধ্যেই ৩৫টি লোকসভা আসন পেলে বাংলার সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে পড়ে যাবে বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন অমিত শাহ। আরপরই এমন পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ন্যাশানাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)।
একশো দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার টাকা এখনও বকেয়া। বারবার চিঠি পাঠিয়ে তা চাওয়া হলেও কোনও কর্ণপাত করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে এবার সামনে এল বড় পরিকল্পনার। আর এই নয়া পরিকল্পনা করেই বাংলার ঘাড়ে আরও আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দিতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবার থেকে বাংলায় জাতীয় সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে সেটার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। এই খরচ এতদিন বহন করত কেন্দ্রীয় সরকার। হঠাৎ করে এমন পরিকল্পনায় জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রতিনিধিদের। বড় খবর হল, এই নীতি দেশের মধ্যে শুধুমাত্র আরোপ করা হচ্ছে বাংলার জন্য বলে সূত্রের খবর।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের ওই বৈঠকে যোগ দেন এই মন্ত্রকের সচিব অলকা উপাধ্যায়–সহ অফিসাররা। সেখানে আগামী অর্থবর্ষে জাতীয় সড়ক নির্মাণ ও সম্প্রসারণ নিয়ে বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গ খুব ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে সড়কের জন্য জমি পাওয়া কঠিন। তাছাড়া খরচও বেশি। ক্ষতিপূরণের অঙ্কও বেড়ে যায়। তাই এবার থেকে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে রাজ্যকেই। এখানে মজার বিষয় হল, এমন সমস্যা দেশের সব রাজ্যেই দেখা যায়। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সব খরচা দিলেও বাংলার ক্ষেত্রে এই খরচ বহন করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। কেন্দ্রের এই নীতি মেনে নিতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আদালতে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রকে এই মর্মে চিঠিও দেওয়া হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? রাজ্যে জাতীয় সড়কের কাজ দু’টি সংস্থা করে। এক, ন্যাশানাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। দুই, রাজ্য সরকারের পূর্তদফতরের জাতীয় সড়ক শাখা। ভবিষ্যতে রাজ্য পূর্ত দফতরের মাধ্যমে জাতীয় সড়কের যে কাজ হবে সেটার জন্য কার্যকর হবে মোদী সরকারের এই নীতি। জাতীয় সড়কের সংযোগকারী বাইপাস এবং ‘রিং রোডের’ ক্ষেত্রে রাজ্যকে ক্ষতিপূরণের অন্তত ২৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে বলে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তবে চিঠি এলে সবটা পরিষ্কার হবে।