স্কুল নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা। তার জেরে ১৪ বছর আগে হুগলির গোঘাটে এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় আরামবাগ মহকুমা আদালতের বিচারক ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করলেন। আজ, মঙ্গলবার সেই মামলার সাজা ঘোষণা করা হবে। সাজা ঘোষণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রীদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ায় বৃদ্ধকে খুন, কাঠগড়ায় নার্সিং স্কুলের কর্মী
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর। সেদিন শ্যাওড়া ইউনিয়ন স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন চলছিল। নির্বাচন ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, সেই সময় আমডোবা গ্রামের তৃণমূল কর্মী শেখ নইম উদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহতের স্ত্রী গোঘাট থানায় একাধিক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। ঘটনার পর তদন্তে নামে পুলিশ। মোট ২৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়। কিন্তু বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্তদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়। সোমবার আদালত জানায়, পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে সাতজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বাকি ১৯ জনকে খুনের দায়ে দোষী ঘোষণা করা হয়।
আরামবাগের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক কিসেন কুমার আগরওয়ালের এজলাসে সাজা ঘোষণা হয়। সরকারি কৌঁসুলি শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাঁদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করা হবে। এই মামলার অন্যতম চর্চিত দিক ছিল রাজনৈতিক নেতাদের নাম জড়িয়ে পড়া। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন বর্তমান গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক। তিনি ঘটনার সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন। আরও ছিলেন সিপিএম নেতা দেবু চট্টোপাধ্যায় ও ভাস্কর রায়। আদালত প্রমাণের অভাবে তাঁদের সাতজনকে বেকসুর খালাস করেছে।
এদিন বিশ্বনাথ কারক বলেন, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছিল। সত্যি শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে। ভাস্কর রায়ের অভিযোগ, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদে তাঁদের টেনে এনে হয়রানি করা হয়। এদিন দোষী সাব্যস্ত হতেই গোঘাট-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সঞ্জিত পাখিরা জানান, ঘটনাটি এখনও বিচারাধীন। আদালতের উপর তাঁত পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যারা দোষী, তারা সাজা পাবে। এদিকে, এদিন আদালতের রায় ঘিরে শ্যাওড়া পঞ্চায়েত এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে যাতে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়।