কলকাতা শহরে এই বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গির প্রকোপ বড়সড় আকার নেয়নি। পুরসভা সূত্র বলছে, পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আগামী দিনে ঢিলেমি দিলে বিপদ বাড়তে পারে। এই আশঙ্কাতেই আগে থেকেই সতর্ক প্রশাসন। এই অবস্থায় আরও তিন মাস বর্ষাকাল জুড়ে কলকাতা পুরসভার কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গত বছর থেকে নিউ টাউনে পরিষ্কার হয়েছে ৫২ কিমি খাল, ডেঙ্গি কমেছে ৯০ শতাংশ
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ডেঙ্গির সংক্রমণ এই বছর এখন পর্যন্ত গত বছরের তুলনায় খুব একটা আলাদা নয়। ২০২৩ সালের জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫৫।চলতি বছর ২০২৪ সালের জুনের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১১০ জনের কাছাকাছি। অর্থাৎ পরিসংখ্যান বলছে, সংক্রমণ কিছুটা কম হলেও পার্থক্য খুব বেশি নয়। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন, তাঁদের বাড়ি বা জমির বেহাল অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়েছে। নোটিস দেওয়া হয়েছে। ফলে অনেকেই নোটিস পাওয়ার পর জমে থাকা জল সরিয়েছেন বা আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন।
স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, পুরসভার একার চেষ্টায় এই সাফল্য আসেনি। শহরবাসীও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। যে যার মতো নিজের বাড়ি, ছাদ, জমি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের মতে, এই জনসচেতনতাই ডেঙ্গি রুখতে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে, এখনই আত্মতুষ্টির সময় নয়। বর্ষা আসলে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। জুলাই, অগস্ট ও সেপ্টেম্বর এই তিন মাসই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই প্রতিটি বরোতে নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে বলেই জানানো হয়েছে। ডেঙ্গির মোকাবিলায় পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল টিম ইতিমধ্যেই কাজ করছে। আজ, মঙ্গলবার ফের শহরের দু’টি বরো নিয়ে বৈঠকে বসছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। বৈঠকে মূলত ওই অঞ্চলের ডেঙ্গু পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে। পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, গত বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৯২ শতাংশ কম ছিল। এবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং আক্রান্তের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনায় পুরসভার লক্ষ্য।