বাড়ি ভাড়া দেওয়া যে এক বৃদ্ধের জীবনের শেষ পরিণতি হয়ে দাঁড়াবে, তা কে ভেবেছিল! সোমবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপ পুরসভার সরকারপাড়া এলাকায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা। অভিযোগ, বাড়িতে তিনজন ছাত্রীকে ভাড়া দেওয়ার কারণে রাস্তায় বাঁশ বা রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হল এক বৃদ্ধকে।নিহতের নাম নেপাল দেবনাথ। বয়স ৬৫। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল নবদ্বীপ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারপাড়া এলাকায়।
আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়ির বাইরেই গোপনে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল বধূর দেহ, কীভাবে সন্ধান পেল পুলিশ?
জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ পেশায় টোটো চালক ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরাও এই ঘটনার পরে বাকরুদ্ধ। তাঁদের দাবি, হঠাৎ করে এই খুন নয়, বরং আগে থেকেই পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই এলাকাতেই রয়েছে একটি নার্সিং ট্রেনিং স্কুল। সেখানে হস্টেল থাকলেও খাবারের মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল কিছু ছাত্রীর। সম্প্রতি সেই হস্টেল ছেড়ে তিন জন ছাত্রী এসে নেপাল দেবনাথের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আর এই ভাড়া দেওয়াকেই মেনে নিতে পারেনি নার্সিং স্কুলেরই এক কর্মী নান্টু দেবনাথ। সে অফিসঘাট রোড এলাকার বাসিন্দা।
নেপালবাবুর পরিবারের দাবি, ঘটনার দিন বিকেলেই অভিযুক্ত নান্টু পাঁচজন সঙ্গী নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হাজির হয়। সে খোলাখুলি হুমকি দেয়। ভাড়াটে না তুললে ফল খারাপ হবে হুঁশিয়ারি দেয়। এই হুমকির মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে সাতটার মধ্যে সরকারপাড়া নিশান ক্লাবের সামনে একা পেয়েই নেপাল দেবনাথকে আক্রমণ করে নান্টু ও তার দলবল। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, রড বা বাঁশ জাতীয় কোনও কিছু দিয়ে সোজা মাথায় আঘাত করা হয়। ঘটনায় নেপালবাবু রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি করে তাঁকে নবদ্বীপ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত নান্টু দেবনাথ পলাতক। নবদ্বীপ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। খুনের মোটিভ কী, আদৌ কেউ পরিকল্পনা করে খুন কি না এবং অভিযুক্তদের মধ্যে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। নেপাল দেবনাথের বউমা সংবাদমাধ্যমকে জানান, হস্টেলের ছাত্রীরা নিজের ইচ্ছায় এখানে এসেছিলেন। তার জন্য তাঁর শ্বশুরকে এইভাবে মারবে, ভাবতেই পারছেন না। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দ্রুত অভিযুক্তকে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি উঠেছে।