নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় জেলে রয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে এই জামিন শুধু ইডির দায়ের করা মামলার ক্ষেত্রে। সিবিআইয়ের অন্য একটি মামলায় এখনও তিনি ছাড়া পাননি। ফলে আপাতত জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না তিনি।
আরও পড়ুন: অবশেষে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে সরলেন কল্যাণময়, এলেন কে?
কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দায়িত্বে থাকার সময় শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। ২০১২ সালে তিনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির প্রশাসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ২০১৬ সালে তাঁকে পর্ষদের সভাপতি করা হয়। এরপর টানা ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি সেই পদে ছিলেন। এই সময়কালে, বিশেষ করে ২০১৬ সালের প্যানেল ঘিরে বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার চেয়ে টাকার ভিত্তিতে প্রার্থী বেছে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ ছিল। সেই রায়ের ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে আরও একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, তিনি নিয়ম ভেঙে দীর্ঘদিন পর্ষদের সভাপতির পদে থেকেছেন। সাধারণত এই পদে থাকার বয়সসীমা ৬০ বছর। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রে প্রথমে সেটি বাড়িয়ে ৬৫ ও তারপর আবার ৬৮ বছর করা হয়। ৬৮ পার করার পরেও আরও প্রায় দেড় বছর সেই পদে থেকে বেতন নিয়েছেন এবং দফতরের কাজ করেছেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তাঁর তৈরি উপদেষ্টা কমিটিতেও সদস্য হিসেবে ছিলেন। এই কারণে নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম সিবিআই তদন্ত শুরু করে । পরে তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে ইডিও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে আলাদা মামলা দায়ের করে। দুটি মামলার ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেল হেফাজতে ছিলেন। এই অবস্থায় কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ইডির মামলায় জামিনের আবেদন করেন। ইডি আদালতে এর বিরোধিতা করলেও বিচারক সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। তবে জামিন পাওয়া সত্ত্বেও এখনই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। কারণ সিবিআইয়ের মামলায় তাঁর বিচার এখনও চলছে। ফলে তাঁকে আপাতত জেলেই থাকতে হবে।