সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমস্ত জেলায় বড়দিন উদযাপন করবে।বিশেষ করে পুরানো গীর্জাগুলিতে উত্সব পালন করা হবে বলে জানান তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে ক্রিসমাস কার্নিভালের উদ্বোধন করার সময় মমতা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের সরকার শুধু কলকাতাতেই বড়দিন উদযাপন করে আসছে। আমরা এর পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি কোচবিহার থেকে ঝাড়গ্রাম পর্যন্ত জেলার সমস্ত পুলিশ কমিশনারদের এই বছর উদযাপনের আয়োজন করতে বলছি। এটি বিশেষ করে এমন জায়গায় করা উচিত যেখানে পুরানো গীর্জা অবস্থিত৷’কলকাতার আর্চবিশপ থমাস ডি'সুজার উপস্থিতিতে মমতা এই ঘোষণা করেন। এদিকে আর্চবিশপ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং রাজ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য মমতাকে কৃতিত্ব দেন। আর্চবিশপ বলেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আমি আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রীকে মে মাসে আপনার বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই। আপনি সমগ্র রাজ্যকে যে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার জন্য আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এবং আপনার নেতৃত্বে আমরা নিরাপদ বোধ করি। এটাই বড়দিনের বার্তা। শান্তি ভালোবাসার ফল। সত্য, ধৈর্য ও সেবা, কোনও প্রকার সাম্প্রদায়িকতা বা বিভাজন নয়, কথায় ও কাজে।’এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, মমতার এই বড়দিন পালনের ঘোষণা আধতে গোয়া নির্বাচনকে মাথায় রেখে। বাংলায় খ্রিস্টান ভোটারের হার ০.৭২ শতাংশ। অন্যদিকে গোয়ায় খ্রিস্টান ভোটারের হার ২৫.১ শতাংশ। চলতি বছর শেষেই ফের একবার গোয়া যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে কলকাতায় দাঁড়িয়ে মমতার ভাষণে গোয়া প্রসঙ্গও উঠে আসে।মমতা বলেন, ‘আমরা ভ্যাটিকান থেকে গোয়া এবং গোয়া থেকে কলকাতা পর্যন্ত সর্বত্রই বড়দিন উদযাপন করব। আমি সম্প্রতি গোয়ার আর্চবিশপের সাথে কথা বলছিলাম এবং আমি আমাদের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের কথা বলেছিলাম। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল সম্প্রদায়, বর্ণ, ধর্মকে ভালোবাসতে হবে। ঐক্য শক্তিশালী হলে আমাদের দেশ শক্তিশালী হবে। ঐক্য শক্তিশালী না হলে আমাদের পতন হবে।’এদিকে এই প্রেক্ষিতে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘একদিকে তিনি সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের খুশি করার চেষ্টা করছেন কিন্তু অন্যদিকে, তিনি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করছেন যা ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া খ্রিস্টানদের জন্য স্থায়ী ভারতীয় নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দেয়।’