ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের হয়রানির অভিযোগ তুলে কলকাতার রাস্তায় নামলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ভিজতে ভিজতে মিছিলে হাঁটছেন জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মিছিলটি মধ্য কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হয়ে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে গিয়ে শেষ হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পথটি নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। প্রায় ১৫০০ পুলিশ কর্মী ব্যারিকেড দেওয়া ফুটপাথ এবং সংলগ্ন ভবনগুলি পাহারা দিচ্ছে। এদিকে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের দামামা আজই বাজিয়ে দেন মমতা। মোদীর বঙ্গ সফরের আগে মমতা বললেন, 'বাংলা তো আমাদের দখলে থাকবে। পরে ইন্ডিয়া টিম নিয়ে আমরা দিল্লি দখল করব।' (আরও পড়ুন: 'বেকসুর খালাস হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে...', উঠল দাবি, হাইকোর্টে গৃহীত সঞ্জয়ের আবেদন)
আরও পড়ুন: ওপারে ইউনুস সরকার ভাঙছে পূর্বপুরুষের বাড়ি, এপারে কী বলছেন সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ?
মমতা আজ বলেন, 'ভারত সরকার এবং বিজেপির এই আচরণে অত্যন্ত লজ্জিত, ব্যথিত, দুঃখিত, মর্মাহত। ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। বিজেপি কি দেশের জমিদারি পেয়ে গিয়েছে? যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি রোহিঙ্গা বলে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের কাছে আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। আমাদের ২২ লক্ষ বাংলার মজদুর আছে। তাঁরা বাংলায় থাকলে অনেক ভালো থাকতে পারেন।'
এই কর্মসূচির কারণে শহরের মধ্য অংশে একাধিক ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গাড়িগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের জেলা সদর শহরগুলিতেও একই ধরনের বিক্ষোভের আয়োজন করেছে তৃণমূল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্ধারিত রাজ্য সফরের একদিন আগে বিজেপির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর ঘাসফুল শিবিরের 'হাতিয়ার' বাঙালি অস্মিতা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ৪৪৭ জন বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিককে ওড়িশা সরকার আটক করেছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে অধিকাংশকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি ভেবে পশ্চিমবঙ্গের যে সব পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছিল তাদের। ছাড়া পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার। এদের আটক করেছিল ওড়িশার ঝাড়সুগুড়ার পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার নাম করে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বেআইনিভাবে আটক করে বিজেপি শাসিত ওড়িশা সরকার। আটক শ্রমিকদের পরিবারগুলি দাবি করে যে তাদের কাছে আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ডের মতো সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি ছিল। এই আবহে বাংলার ক্ষমতাসীন দল আটক শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছিল। পরে নিজেদের 'ভুল' শুধরে নেয় ওড়িশা।