বিক্ষোভ সামলাতে গিয়ে বারবার পুলিশ কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কখনও মারধর, কখনও ইট-পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি নাদিয়াল ও রবীন্দ্রনগরের মতো এলাকায় এমনই ঘটনার পর পুলিশকর্মীদের সুরক্ষা বাড়াতে বড় উদ্যোগ নিল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, লালবাজার থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগের আওতায় মহিলা পুলিশ কর্মীদের জন্য আনা হচ্ছে নতুন ধরনের হেলমেট, বডিস্যুট।
আরও পড়ুন: শহরে ৪০টি স্পর্শকাতর জায়গা চিহ্নিত হয়েছে, ৮৫টি সিসি ক্যামেরা বসাচ্ছে লালবাজার
লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১,০০০টি আধুনিক বডিস্যুট কেনার জন্য ৩৫.৪ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। অন্যদিকে, ৫০০টি শক্তপোক্ত হেলমেট কেনার জন্য ৭.৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অশান্তি সামলাতে গিয়ে এতদিন পুলিশকে কখনও কখনও ক্রিকেট খেলার হেলমেট পরেই নামতে হত নিয়ন্ত্রণে। এবার সেই চিত্র বদলাতে চলেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আধুনিক যে হেলমেট আনা হচ্ছে তা হালকা হলেও অত্যন্ত মজবুত। ইট-পাথর ছোড়া হলেও সেটি রুখে দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে এই হেলমেটের। এগুলি তৈরি হচ্ছে ফাইবারগ্লাস রিইনফোর্সড প্লাস্টিক দিয়ে। হেলমেটগুলির মধ্যে ১০০টি থাকছে র্যাফ-এর জন্য (নীল রঙের) এবং ৪০০টি অন্যান্য বিভাগের জন্য (সবুজ রঙের)।
এই হেলমেটগুলির ওজন ১.৫ কেজির বেশি নয়। সামনের দিকে থাকবে স্বচ্ছ কভার, যাতে বাইরে স্পষ্ট দেখা যায়। আরামদায়ক ব্যবহারের জন্য ভিতরে জীবাণুমুক্ত নরম কুশন থাকবে, যা ঘাম শুষে নিতে সক্ষম। কানে পুরোপুরি ঢাকা দেবে এমনভাবেই এই হেলমেট তৈরি। স্ক্র্যাচ যাতে না পড়ে, তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে। জাতীয় পরীক্ষাগারে এই হেলমেটগুলির মান যাচাই করা হয়েছে, এমনকি জম্মু ও কাশ্মীরেও ব্যবহার করা হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে।
মহিলা পুলিশদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে অত্যাধুনিক বডি প্রোটেক্টর। ছাই রঙের এই স্যুট প্রায় ২ কেজি ওজনের, যাতে ব্যবহার করা হয়েছে উচ্চমানের পলিয়েস্টার ও পিইউ আবরণ। স্যুটটির বাইরের স্তরে রয়েছে এসএফ-৪০ বডি কার্ভ প্লেট, এটি ইট, ছুরি কিংবা ছোড়া কোনও বস্তু প্রতিরোধে সক্ষম।
স্যুটের ভেতরে নেট কাপড় এবং এলডিপিই ফোম রয়েছে। এটি ঘাম শোষণের পাশাপাশি আরামদায়ক ব্যবহারের সুবিধা দেবে। গলায় রয়েছে নরম কলার। কনুই ও পায়ের গার্ডগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত আঘাতের প্রভাব কমে যায়। এই সরঞ্জামগুলি এনএইবিএল অনুমোদিত পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করেই আনা হচ্ছে।