কলকাতা শহরকে এ–ওয়ান মেগাসিটিতে পরিণত করতে চায় কলকাতা পুরসভা। আর তাই শহরের নাগরিকদের জন্য নানা পরিষেবা ইতিমধ্যেই তারা চালু করেছে। তাতে বড় উপকারও হয়েছে শহরের বাসিন্দাদের। হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে বাড়ি বসে শংসাপত্র পাওয়া থেকে শুরু করে জঞ্জালমুক্ত শহর গড়ে তোলা, কর ছাড় দেওয়া, রাস্তাঘাট, জল, আলো–সহ নানা পরিষেবা দুয়ারে নিয়ে আসা করেছে কলকাতা পুরসভা। এবার বর্জ্য হয়ে উঠছে সম্পদ। তাই এই কাজ করতে এবার ডেনমার্ক থেকে মেশিন কিনে তাক লাগিয়ে দিল কলকাতা পুরসভা।
এদিকে কলকাতা পুরসভা এখন পচনশীল বর্জ্য থেকে সার এবং প্লাস্টিকজাত জঞ্জালের পুনর্নবীকরণ ইউনিট গড়ে তুলছে। যেখানে কাজে লাগবে অপচনশীল বর্জ্যও। বায়ো গ্যাস, অপ্রচলিত বিদ্যুৎ তৈরি করতে উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। আর এবার শৌচ বর্জ্যকেও কাজে লাগিয়ে নানা কাজ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। তার থেকে তৈরি করা হবে সার। এই কাজের জন্য দু’টি বিশেষ ধরণের মেশিন কিনেছে কলকাতা পুরসভা। ‘অনসাইট স্লাজ ডিওয়াটারিং ভেহিকল’ মেশিনটির নাম। এটা ডেনমার্ক থেকে কেনা হয়েছে। মেশিনযুক্ত গাড়ি কেনা থেকে শুরু করে এই কাজের জন্য ধাপায় ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে। যার খরচ প্রায় ৯ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বাসে তীব্র গতিতে সজোরে লরির ধাক্কা, হাওড়ার বাগনানে মৃত ২, আহত ২৬
অন্যদিকে এই দুটি মেশিনের উদ্বোধন করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গতকাল এই উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল সাফাই ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই দুটি মেশিনযুক্ত গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সমীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে ফল মিলতেই কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শহরের বেশিরভাগ বাড়ির শৌচালয় নিকাশি নালার সঙ্গে যুক্ত। আবার বহু বাড়িতে আজও সেপটিক ট্যাঙ্ক রয়ে গিয়েছে। এই সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শৌচবর্জ্য তোলা হতো। আর সেটা পরিশোধনের ব্যবস্থা ছিল না। এবার এই বিষয়ে পদক্ষেপ করল কলকাতা পুরসভা।
কী কাজ করবে মেশিন দুটি? কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই গাড়ি পাইপের মাধ্যমে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শৌচ বর্জ্য তুলবে। তারপর তা নানা ধাপে পরিশোধন করবে। তার জেরে থকথকে বস্তু পৃথক হয়ে যাবে। তখন পড়ে থাকবে তরল পদার্থ। সেই তরল পদার্থ জীবাণুমুক্ত হবে। যেটা সরাসরি নিকাশি নালায় ফেলা যাবে। আর ওই থকথকে বস্তু চলে যাবে ধাপায়। সেখানে গড়ে উঠেছে ‘লাইম স্টেবিলাইজেশন ইউনিট’। যেখানে ওই থকথকে বস্তু ট্রিটমেন্ট করে তৈরি হবে জৈব সার। আর সেসব গাছের বা ফসল ফলানোর কাজে ব্যবহৃত হবে।