সত্যিই কি ১৪৪ বছর পরে মহাকুম্ভ মেলা হচ্ছে? তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ‘১৪৪’ সংখ্যাটা নিয়ে হইচই হলেও আদতে প্রতি ১২ বছরে মহাকুম্ভ মেলা হয়। এবার যে বিশেষ যোগে মহাকুম্ভ মেলা হয়েছে, সেটা ১৪৪ বছর পরে তৈরি হয়েছে। আর মঙ্গলবার সেই কথাটাই তুলে ধরলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেকে ‘একটু অজ্ঞ’ বলে অভিহিত করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানান, ধর্মীয় আস্থা-বিশ্বাসের দিক থেকে মহাকুম্ভ মেলা নিয়ে তিনি কিছু বলেননি। বরং মহাকুম্ভ মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ সরকারের যে ফাঁক-ফোকর আছে, তার সমালোচনা করেছেন। আর সেজন্য যোগী আদিত্যনাথ ‘সাহেব গালাগালি দিলেও’ তাঁর গায়ে ফোসকা পড়বে না বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার নবান্ন থেকে মমতা বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, আমার যদি ভ্রান্তি থাকে, তাহলে আপনারা সংশোধন করে দেবেন। ১৪৪ বছর পরে কুম্ভ (মেলা) হচ্ছে, এটা ঠিক নয়। মিডিয়াকে কন্ট্রোল করছেন বলে…..ওয়ান সাইডেড (একতরফা প্রচার চলছে)।’
‘আমি একটু অজ্ঞ আছি এ ব্যাপারে’
তবে মুখ্যমন্ত্রী এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে যাঁরা কুম্ভে স্নান করছেন, তাঁদের বিষয়ে কিছু বলছেন না। তাঁদের প্রতি সম্মান আছে। পুণ্যস্নান নিয়ে কোনও কথা বলেননি। কে কোথায় যাবেন, কোথায় পুণ্যস্নান সারবেন, কে কী খাবেন, সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। যিনি যা বিশ্বাস করেন, তিনি সেটা করবেন। কিন্তু ১৪৪ বছর পরে মহাকুম্ভ হচ্ছে বলে প্রচার চালানো হচ্ছে, সেটা নিয়েই বলতে চাইছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘আমি একটু অজ্ঞ আছি এ ব্যাপারে। যদি কেউ বিশিষ্ট মানুষ থাকেন, আমি তাঁদের কাছে অনুরোধ করব, যে আপনারা গবেষণা করে আমাদের একটু জানাবেন যে সঠিক সত্যটা কী, সঠিক তথ্যটা কী।’
তারইমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, মহাকুম্ভ মেলায় গিয়ে বা প্রয়াগরাজে যাওয়ার পথে অনেক মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। যে মানুষরা তাঁদের স্বজনদের হারিয়েছেন, তাঁরা যেন অবিলম্বে আর্থিক সহযোগিতার টাকা পান। অনেক মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। ট্রেনে চড়তে গিয়ে অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। দুর্ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদেরও আর্থিক অনুদান প্রদানের ঘোষণা করেছে সরকার। প্রচুর মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘আরও সিরিয়াস হও’, চিকিৎসকদের সামনেই স্বাস্থ্যসচিবকে পরামর্শ দিলেন মমতা
'৪০০ জনকে নিমন্ত্রণ করলে ৫০০ জনের খাবার বানাতে হবে'
আর সেটা যে সরকারের আয়োজনের খামতি কারণে হয়েছে, সেটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন মমতা। তিনি জানান, যদি বিয়েবাড়ির আয়োজন করা হয়, তাহলে বাড়তি খাবারের বন্দোবস্ত করতে হয়। ৪০০ জনকে নিমন্ত্রণ করলে ৫০০ জনের খাবারের বন্দোবস্ত করে রাখাটাই হল সিস্টেম। ধর্মীয় উৎসবের ক্ষেত্রেও সিস্টেম অনুসরণ করে চলতে হবে। করতে হবে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
আরও পড়ুন: ‘চা–বাগান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে কিছু ভূতুড়ে দল’, নবান্ন থেকে তোপ মমতার
‘যোগী সাহেব আমায় যতই গালাগালি দিন….’
সেইসঙ্গে তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু কারও দোষ থাকলে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টি কাম্য নয়। কারও ডেথ সার্টিফিকেট না দেওয়ার বিষয়টি মোটেও কাম্য নয় বলে দাবি করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘যোগী সাহেব আমায় যতই গালাগালি দিন, তাতে আমার ফোসকা পড়বে না।’