গতকাল বাংলায় পা রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। তারপরই রাজ্যপালের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকে মনে করছেন এই পরামর্শ রাজ্য সরকারকে দিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আগেই তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। খোলসা করেননি রাজ্যপাল।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের নানা ইস্যুতে মতাপার্থক্য দেখা দিয়েছে। তবে নরম–গরমে একে অপরকে বার্তা দিয়ে থাকেন। আবার সংঘাতের আবহ দেখতে পাওয়া যায়। যদিও সম্প্রতি রাজভবনে বসে সাংবাদিকদের রাজ্যপাল জানিয়ে ছিলেন, আসলে রাজভবন–নবান্নের মধ্যে কোনও সংঘাত নেই। সবটাই সংবাদমাধ্যম তৈরি করে। রাজ্য সরকার ক্যাগকে যথেষ্ট তথ্য দেয় না বলে অভিযোগ অনেকেই তুলে থাকেন। এবার নাম না করে রাজ্য সরকারকে ক্যাগের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে পরামর্শ দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সমস্ত রাজ্যের সরকার যাতে ক্যাগের কাজকে গুরুত্ব দেয় সেই পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।
এদিন অডিট দিবস উপলক্ষ্যে কলকাতার ‘কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিট জেনারেল’–এর অফিসে হাজির হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে উপস্থিত হয়ে অডিটরদের কাজের বর্ণনা করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল এখানে বলেন, ‘অডিটরদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর মতে, মানুষের কষ্ট করে উপার্জন করেন। আর সেই অর্থ কোথায় খরচ হচ্ছে তার হিসেব রাখা অত্যন্ত জরুরি। নাম না করে এই বার্তা দিলেও দুটো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এক, এই পরামর্শ কি রাজ্য সরকারকে দিলেন? দুই, কেন্দ্রীয় সরকারকে এমন পরামর্শ দিলেন কি? যদিও খোলসা করেননি রাজ্যপাল।
এদিকে গতকাল বাংলায় পা রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। তারপরই রাজ্যপালের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকে মনে করছেন এই পরামর্শ রাজ্য সরকারকে দিয়েছেন রাজ্যপাল। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আগেই তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তারপরই সিএজি অফিসে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বলেন, ‘ক্যাগের কাজকে স্বাগত জানানো উচিত। প্রত্যেক প্রশাসনের এটা নৈতিক কর্তব্য হওয়া উচিত।’ এমন আবহে এমন মন্তব্য জোর চর্চর কারণ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে যে নরেন্দ্র মোদী ইউপিএ আমলের ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে দেখিয়ে সরব হয়েছিলেন এবং ক্ষমতায় এসেছিলেন এখন সেটাই তিনি মানছেন না বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক প্রকল্পে দুর্নীতি রয়েছে বলে সংসদে ক্যাগ রিপোর্ট পেশ করেন। যার ফলে বিপাকে পড়ে যায় নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সাফাই হিসাবে বলা হয়, ওই রিপোর্ট ভুল আছে। তারপর একাধিক ক্যাগের অফিসারকে বদলি করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানে রাজ্যপাল বলছেন, ‘সিএজি সর্বদা সত্য তথ্য তুলে ধরে। কে দোষী, কে দোষী নয়, তা সিএজি’র অডিটররা বের করে আনেন। অর্থ কোথায় ব্যয় হচ্ছে সেটা সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য সিএজি’কে তথ্য দেওয়া উচিত। কারণ তারা বেহিসেবি খরচ নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করে এবং দোষীদের খুঁজে বের করতে পারেন।’