একছাতার তলায় তাঁরা বসবাস করেন না। কিন্তু পরিস্থিতি তাঁদের মধ্যে সতীনের সম্পর্ক তৈরি করেছে। তাতে আগেই সংসার ভেঙেছে। এবার ঘরছাড়া করার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। হ্যাঁ, এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। কারণ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বেহালার বাড়ি কিনে নিয়েছেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শোভনবাবুর বেহালার বাড়িটি বৈশাখীর নামে হস্তান্তরিত হয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়কে সসম্মানে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বৈশাখীদেবী। রত্না সসম্মানে বাড়ি না ছাড়লে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন শোভন–বান্ধবী।বেহালার পৈতৃক বাড়িটি শোভন চট্টোপাধ্যায় কোটি টাকারও বেশি দামে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রি করে দিয়েছেন। আইনত এখন ওই বাড়ির মালিক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে পরিস্থিতি এখন খুব জটিল আকার ধারণ করেছে। এখন রত্না চট্টোপাধ্যায় কোথায় যাবেন? তিনি কী এই বাড়ি ছাড়বেন? আইনের লড়াই করবেন? উঠছে প্রশ্ন। আর্থিক অনটনের কারণে নিজের পৈতৃক বাড়িটি বৈশাখীকেই বিক্রি করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মহানাগরিক।কেন্দ্রীয় সংস্থা–সহ নানা মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দাম্পত্য সম্পর্কও এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাই বিপুল আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেই বাড়ি বিক্রি করেছেন তিনি। এখন তেমন কোনও রোজগার না থাকায় আইনি খরচ চালাতে সমস্যায় পড়ছেন শোভনবাবু। নোটিশ দিয়ে রত্নাকে বের করে দেওয়ার কথা বলতেই পাল্টা হুঙ্কার ছেড়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে আমাকে বের করে দেখাক। সব কিছু অত সহজ নয়।’এখন এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি শোভনবাবুকে জানিয়েছিলাম আমার সবকিছুই তিনি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু উনি বিনামুল্যে সাহায্য নিতে চাননি। ওর যেহেতু এখন আয় বন্ধ, আইনি খরচ চালাতে সমস্যা হচ্ছিল, তাই আমার কাছে বেহালার বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন যেহেতু আমি বাড়ির মালিক, তাই রত্নাদেবীকে আর ওই বাড়িতে থাকতে দেওয়া হবে না। তবে শোভনবাবুর মেয়ে যদি মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সেখানে থাকতে চান সেটা থাকতে পারেন। ছেলের বিষয়টিও তাই।’এই বাড়ি বিক্রি সংক্রান্ত বিষয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার আয়ের পথ বন্ধ। মহেশতলার গুদামের ভাড়াও আমাকে দেওয়া হয় না। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে আদালতে। আমার রোজগার নেই, অর্থ সংকট চলছে। আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থ প্রয়োজন। তাই বৈশাখী আমাকে অর্থ দিয়ে সাহায্যের কথা জানিয়েছিলেন। আমি তা গ্রহণ করিনি। আমার বেহালায় একটি বাড়ি রয়েছে, তাই সেটি তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছি। সেই অর্থ দিয়েই আপাতত প্রয়োজন মিটবে। এই সহায়তার জন্য ওঁকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’