প্রয়াত প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক দীপক ঘোষের লেখা বই ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।এই বিতর্কিত বই নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আদালতে। বারাসত ফার্স্ট কোর্টের সিভিল জজ (জুনিয়র ডিভিশন) এই বইয়ের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। বইটির প্রকাশ, বিক্রি, বিতরণ কিংবা প্রচার, সব কিছুতেই আপাতত আইনি রাশ টেনে দিল আদালত।
আরও পড়ুন: একুশের কৌশল ছাব্বিশেও! ভোটের আগে নয়া সরকারি প্রকল্পের ঘোষণা মমতার, কী হবে?
তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এনিয়ে মানহানি মামলা করেছিলেন। অভিযোগ, বইটিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক শীর্ষ তৃণমূল নেতানেত্রী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বা পরবর্তী কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। দীর্ঘদিন প্রশাসনিক পদে থাকার পর দীপক ঘোষ রাজনীতিতে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে। প্রথমে মহিষাদল থেকে বিধায়ক হন। পরে যাদবপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং মেদিনীপুরে প্রভোদ পাণ্ডার বিরুদ্ধে ভোটে লড়েন। যদিও জয় অধরা ছিল। রাজনীতির ময়দান থেকে অনেকটাই সরে গেলেও, তাঁর কলম থেমে থাকেনি। সেই কলমই আজ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
তাঁর লেখা বইটি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তৈরি হয়। বইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের বেশ কিছু নেতানেত্রীর সম্পর্কে লেখা একাধিক মন্তব্য নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় শাসক শিবির। বহু বছর আগে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ও এই বই নিয়ে মানহানির মামলা করেছিলেন, যার নিষ্পত্তি আজও হয়নি।
বইটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে কাকলি ঘোষ দস্তিদারের পুত্র বৈদ্যনাথ ঘোষ দস্তিদার জানান, এই বইয়ে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর নয়, তাঁর বাবা-মা সম্পর্কেও বিতর্কিত মন্তব্য রয়েছে। তাই আলিপুর আদালতে একটি মামলা এবং বারাসত আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। তিনি আরও জানান, যাঁরা বইটি ছেপেছেন, প্রকাশ করেছেন এবং পরিবেশন করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শাসক দলের তরফে স্পষ্ট বার্তা, নেতানেত্রীদের নামে অবমাননাকর মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না। অন্যদিকে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। ততদিন পর্যন্ত বইটি আর বাজারে আসবে না।