মাঠে ঢুকে রেফারির পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেস নেতার ভাইপোর বিরুদ্ধে। ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আবার চুনোপুুঁটি কেউ নন, তিনি মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। আর তাঁর ভাইপো রাজা খাঁয়ের 'কীর্তি' ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশ-প্রশাসনের প্রশয়েই রাজার মতো ‘তৃণমূলি সমাজবিরোধী গুন্ডাদের’ এত বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে রাজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে অভিযুক্তের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের কোনও সম্পর্ক নেই।
স্বাধীনতা দিবসেই রেফারি-শিক্ষকের পেটে লাথি
তাতে অবশ্য বিতর্ক থামেনি। আর সেই ঘটনা ঘটেছে স্বাধীনতা দিবসে। মেদিনীপুরের চার্চ স্কুলের মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল ছোটদের ফুটবল ম্যাচের। প্রাথমিকভাবে সবকিছু ঠিকঠাকভাবেই চলছিল। কিন্তু রাজার দলের বিপক্ষে গোল হতেই পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেনের ভাইপো গুন্ডামি শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: 'ঘেউ-ঘেউ করছে কেন? কুকুরের মাংস খেয়েছে….', নোংরামি করায় আফ্রিদিকে চাবকান ইরফান!
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, গায়ের জোর ফলিয়ে বিপক্ষের দলের গোল বাতিল করে দিতে বাধ্য করেন রাজা। সেইসময় রেফারি লক্ষ্মণ মাণ্ডির পেটে লাথি মারেন। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রেফারির দিকে তেড়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি হিমাদ্রির ছেলে রাজা। আঙুল উঁচিয়ে ঝামেলা করছেন। আর একটা সময় রেফারিকে লাথি মেরে দেন।
রেফারি আদতে পেশায় স্কুলশিক্ষক। আবার খড়্গপুর সাব-ডিভিশন রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যও তিনি। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘তিনি তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের সদস্যও বটে। আমি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করব, ১৯৮৯ সালের তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার উপযুক্ত ধারা অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। নাহলে লক্ষ্মণ মান্ডিকে সুবিচার পাওয়াতে ওঁকে সবরকম সহায়তা করব।’
আরও পড়ুন: 'পাকের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিই করত কলকাতায় ঘুরে যাওয়া জ্যোতি, মিলেছে জোরদার প্রমাণ'
মমতা থেকে রাজা - সবাই এক, কটাক্ষ তৃণমূলের
সেইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘আসলে তৃণমূলের সংস্কৃতি হল রেফারিকে কুরুচিকর আক্রমণ শানানো, তা ভোটের ময়দানের ক্ষেত্রে রেফারির ভূমিকায় থাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণই হোক অথবা স্থানীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার ময়দানে এই পুঁচকে-পাঁচকা তৃণমূলি রাজা খাঁ হোক।’
যদিও সেই ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলেছে তৃণমূল। শাসক দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা দাবি করেছেন, রাজার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং কুরুচিকর। আবার তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, যখন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ছেলে আকাশ ব্যাট দিয়ে সরকারি অফিসারকে মেরেছিলেন, তখন তো বিজেপির ওই ঘটনার কেউ একবারও নিন্দা করেননি।