রানাঘাট থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত থার্ড লাইন নির্মাণের প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দিল রেলওয়ে বোর্ড। পূর্ব রেলওয়ের শিয়ালদা ডিভিশনের অন্তর্গত এই ২৬ কিমি রেল প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৪৭৪.০৯ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই রেলওয়ে বোর্ডের সিইও ও চেয়ারম্যানসহ পরিকাঠামো, পরিচালনা, অর্থ সংক্রান্ত সদস্যরা প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন। এখন শুধুই রেলমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন: পরীক্ষার্থীদের সহিংস প্রতিবাদের মুখে NTPC এবং লেভেল ১ পরীক্ষা স্থগিত করল রেল
এই তৃতীয় লাইন নির্মাণের ফলে রানাঘাট-মুর্শিদাবাদ-লালগোলা রুটে চলা যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের গতি ও দক্ষতা বাড়বে বলে মনে করছেন রেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে দ্বিমুখী এই লাইনের উপর চাপ ১১৩.৮ শতাংশ, যা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ১৬৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত একটি লাইন চালুর প্রস্তাব ‘জরুরি’ বলেই ধরা হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি হবে সাতটি স্টেশন ও চারটি বড় সেতু। গেদে-দর্শনা রুট ধরে বাংলাদেশ পর্যন্ত পণ্য পরিবহণের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হবে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত খুলতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
রেল জানিয়েছে, এই প্রকল্প মাল্টি-ট্র্যাকিং, ফ্লাইওভার ও বাইপাস লাইনের মাধ্যমে রেল চলাচলের সামগ্রিক পরিকাঠামোকে উন্নত করবে। ধুবুলিয়া ও মুর্শিদাবাদে ইতিমধ্যেই দুটি পণ্য লোডিং শেড চালু হয়েছে। বহরমপুর কোর্ট স্টেশনে একটি নতুন কোচিং টার্মিনাল তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এসব কারণে এই রুটে ট্রেন চলাচলের ঘনত্ব বাড়বে, যা সামাল দিতে তৃতীয় লাইন গুরুত্বপূর্ণ। রেল জানিয়েছে, প্রকল্পটি আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর্থিকভাবে এটি লাভজনক বলেই মনে করছে রেল বোর্ড। হিসেব অনুযায়ী, ৩০ বছরের ভিত্তিতে প্রকল্পটির ফিনান্সিয়াল ইন্টারনাল রেট অব রিটার্ন ১০.৪৭ শতাংশ এবং ইকনমিক ইন্টারনাল রেট অব রিটার্ন ২৭.১৬ শতাংশ। রেল কর্তৃপক্ষের মতে, এই তৃতীয় লাইন নির্মাণের ফলে নদিয়া জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও নতুন গতি আসবে।