ডাক্তারের লোগো লাগানো ছোট গাড়ি। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভিতরে কী রয়েছে। কিন্তু সেই গাড়িতেই লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছিল তিন হাজার বোতল কাফ সিরাপ। সন্দেহ হওয়ামাত্রই পিছু নেয় পুলিশ। আর তারপরই রীতিমতো সিনেমার কায়দায় তাড়া করে গাড়ি থামিয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলল পাচারকারীকে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অধিকাংশ কাশির সিরাপ পাচার হচ্ছে মুর্শিদাবাদ সীমান্ত হয়ে, সতর্ক পুলিশ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে বালুরঘাট শহর থেকে ওই সন্দেহজনক গাড়িটি বের হতেই নজরে আসে পুলিশের। শহর সংলগ্ন রঘুনাথপুর এলাকায় পৌঁছতেই গাড়ি নিয়ে তাড়াহুড়ো করে পালানোর চেষ্টা করেন চালক। তবে পুলিশ আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। সোজা সামনে এসে গাড়ির পথ আটকে দেয়। ধৃত চালকের নাম শামিম শেখ। বাড়ি কুমারগঞ্জ থানার অন্তর্গত জয়দেবপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কাফ সিরাপ আগে থেকেই ভিন জেলা থেকে এনে রাখা হয়েছিল। সম্ভবত বাসস্ট্যান্ড থেকেই তা গাড়িতে তোলা হয়। প্রায় ১০টি কার্টনে থাকা এই সিরাপ কুমারগঞ্জের দিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
তবে সবথেকে চমকপ্রদ তথ্য যে গাড়িতে করে এই সিরাপ পাচার হচ্ছিল, সেটিতে ছিল ‘ডাক্তার’ সাইনবোর্ড। তদন্তকারীরা মনে করছেন, পুলিশের নজর এড়াতেই এই প্রতারণার কৌশল। তবে গাড়ির নম্বর যাচাই করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য পরিষ্কার নয়। সন্দেহ করা হচ্ছে, নম্বরপ্লেটটিও ভুয়ো হতে পারে।
বালুরঘাট সদর ডিএসপি বিক্রম প্রসাদ জানিয়েছেন, গাড়িটি পতিরামের দিকে যাচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বালুরঘাট থানার পুলিশ তৎপর হয়। রঘুনাথপুর এলাকায় গিয়ে তাড়া করে ধরে ফেলে। গাড়ি থেকে প্রায় তিন হাজার বোতল কাফ সিরাপ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এই সিরাপ পাচারের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, চালক শামিম পাচারের মূল পাণ্ডা নয়। এক ব্যক্তি প্রথমে গাড়িটি চালিয়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে শহরের বাইরে আনেন। রঘুনাথপুরের কাছে সেই চালক নেমে যায়। এরপর স্টিয়ারিং ধরে শামিম। তাকে বলা হয়েছিল, গন্তব্যে গাড়ি পৌঁছে দিতে পারলে চার হাজার টাকা দেওয়া হবে। তবে শেষরক্ষা হয়নি তার আগেই পুলিশ ধরে ফেলে তাকে। চিকিৎসকের লোগো লাগানো গাড়িতে এমন চক্রান্ত সামনে আসায় বালুরঘাট জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার পর আধিকারিকরা জানান, পাচারের পুরো চক্র খুঁজে বের করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে।