কোন্নগরের কানাইপুরে তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না হত্যাকাণ্ডে অবশেষে বড় সাফল্য পেল পুলিশ। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে তদন্তকারী দল। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীর ভাই, সঙ্গে দুই পেশাদার সুপারি কিলার। শুধু তাই নয়, তদন্তে উঠে এসেছে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর নাম। তিনি আবার নিহত নেতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁকেও আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
আরও পড়ুন: প্রেমঘটিত কারণ, জমি বিবাদের জেরেই খুন মালদার তৃণমূল নেতা, গ্রেফতার ৪ জন
গত বুধবার দুপুরে কানাইপুরের একটি অটোস্ট্যান্ডের কাছে নিজের গ্যাস সরবরাহ অফিস থেকে বেরোনোর সময় হামলার মুখে পড়েন পিন্টু চক্রবর্তী। জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুষ্কৃতীরা। একের পর এক কোপে গুরুতর জখম হন তিনি। একটি হাত কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে এসএসকেএম-এ নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। সন্ধ্যেবেলায় মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়ায় হুগলি জুড়ে। দলীয় নেতা খুন হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল নেতৃত্বও। পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। খতিয়ে দেখে এলাকার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ। একটি ফুটেজে ধরা পড়ে পাশের পানশালায় বসে থাকা দুই সন্দেহভাজনের ছবি। সেই সূত্র ধরেই জোরদার তল্লাশি চালিয়ে বেলঘরিয়া ও বারাসত থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ডানকুনিতে পিন্টু চক্রবর্তীর মালিকানাধীন একাধিক জমি নিয়ে চলছিল বিবাদ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেই জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকেই খুনের ষড়যন্ত্র। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতরা পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে খুনিদের ব্যবহার করে এই হামলা চালায়। পাশাপাশি, এখনও পলাতক রয়েছে আরও কয়েকজন। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নিহতের ঘনিষ্ঠ ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের এক কর্তা মানস রায় জানিয়েছেন, বিগত কয়েক মাস ধরেই মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন পিন্টু। কী কারণে তাঁর মধ্যে এমন পরিবর্তন এসেছিল, তা তিনি খোলসা করেননি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূল ষড়যন্ত্রকারীদের ধরতে তৎপরতা জারি রয়েছে। তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে, আর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের ভিত্তিতে খুব শীঘ্রই আরও কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী গোয়েন্দারা।