বাল্যবিবাহ রোধে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। তারপরেও এই সংখ্যাটা কমছে না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরের মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। জেলায় বাল্য বিবাহের এই পরিসংখ্যান প্রশাসনের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার, নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে আরও একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে নাবালিকা অ্যাথলিটের বিয়ে রুখে দিল প্রশাসন
জানা গিয়েছে, এবার ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে সচেতন করা হবে জেলার বাসিন্দাদের। জেলা শাসক খুরশিদ আলি কাদরি জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহ রোধে তথ্যচিত্র ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। সেই ভিডিয়ো মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে। এর পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় সাইনবোর্ড বসানো হবে। সেখানে হেল্পলাইন নম্বর (১০৯৮ ও ১১২) দেওয়া হবে। এই হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে যে কেউ বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন। একইসঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে ব্যবস্থা না নিলেও সংশ্লিষ্ট আধিকারিক বা কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বছরে এই জেলায় বাল্যবিবাহের সংখ্যা দশ হাজারের বেশি। আগামী অর্থবছরের মধ্যে তা একেবারে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর জন্য এই সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা শাসক জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ৩০০ বেশি এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে সাইনবোর্ড বসানো হবে।
জেলা প্রশাসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় সাড়ে ১১ হাজার নাবালিকার বিয়ে হয়। চলতি অর্থবছরে সেই সংখ্যাটা কমেছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ সালে ৫৭ জনের বিয়ে রুখে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। ২০২২-২৩ সালে ৮৮জন, ২০২৩ -২৪ সালে ৯৯ জন এবং ২০২৪-২৫ সালে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৪৪ জন নাবালিকার বিয়ে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকরা বলছেন, বেশিরভাগ ব্লকেই বাল্য বিবাহের সমস্যা আছে। প্রতিবছর বাল্য বিবাহ রুখে দেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। তাই ব্লক প্রশাসনকে বাল্য বিবাহ রোধে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, এসব করে লাভ হবে না। কড়া শাস্তি দেওয়া শুরু করলে সব থেমে যাবে।