পহেলগাঁও হামলার ১৫ দিনের মাথায় অবশেষে প্রত্যাঘাত কেঁপে উঠল পাকিস্তানের মাটি। মঙ্গলবার মাঝরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিতে অতর্কিতে হামলা চালাল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে নিকেশ করা হয়েছে মোট ৯টি সন্ত্রাসবাদী ডেরাকে। নির্ভুল প্রত্যাঘাতে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার বদলা নিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই হামলায় কমপক্ষে ১০০ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তারপরই আজ বুধবার শহিদ জওয়ান ঝন্টু শেখের বাবা এবং দাদা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানালেন।
এদিকে গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। হিন্দু পর্যটকদের বেছে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। নাম, পরিচয় জেনে নিয়েই গুলি চালানো হয়। বাংলার তিনজন পর্যটকের প্রাণ গিয়েছিল। তখন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজও মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। আর শহিদ ঝন্টু শেখের বাবা–দাদা এই প্রতিশোধের কথা জানতে পেরে একযোগেই বললেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনী বদলা নিয়েছে। আমাদের ভরসা ছিল। উচিত জবাব দিয়েছে।’
অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং ‘অপারেশন সিঁদুর’ থেকে শুরু করে ‘জয় হিন্দ’। তার উপর ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর সফল অভিযানের জেরে সেনাবাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ–ই–মহম্মদ, লস্কর–ই–তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত ৯টি জঙ্গিঘাটি ধ্বংস হয়েছে। ভারতের কড়া জবাবকে সমর্থন করেছেন দেশের মানুষজন। আর অশ্রুসজল চোখে শহিদ ঝন্টু শেখের স্ত্রীর বক্তব্য, ‘অবশেষে প্রত্যাঘাত হল আমরা আজ আনন্দে কাঁদছি। ভারত সরকার এবং আমার স্বামীর সহকর্মীরা তাঁর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছেন। যেভাবে অভিযানের নামকরণ করা হয়েছে, তাতে আমাদের চোখের জল থামছে না। আমাদের এই আনন্দের কান্না থামবে না।’
আরও পড়ুন: ‘আক্রমণ লাগাতার চলতে থাকুক’, অপারেশন সিঁদুরের পর নিহত আইবি অফিসারের ভাই
এছাড়া কোটলি, ভাওয়ালপুর এবং মুজফ্ফরাবাদে সফল অপারেশন চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। হিন্দু মহিলাদের কাছে সিঁদুরের পৃথক গুরুত্ব আছে। পহেলগাঁও হামলায় ভারতীয় মহিলাদের সিঁথির সিঁদুর মুছে যায়। তারপর এই পাল্টা জবাব দেওয়া হল। তাই এই আক্রমণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’ যার অর্থ সিঁদুর। এই প্রত্যাঘাতের ঘটনা সামনে আসতেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘ন্যায়বিচার মিলল। জয়হিন্দ।’ ঝন্টুর ১২ বছরের ছেলের চোখেমুখে জয়ের হাসি। আর জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার খবর শুনে শহিদ ঝন্টুর বৃদ্ধ বাবা সবুর শেখের কথায়, ‘এবার কবরে শান্তি পাবে ছেলে।’