টানা ১০ ঘণ্টা যুদ্ধ চালিয়ে অবশেষে মহেশতলার পালান ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের বিধ্বংশী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনল দমকল। অবশ্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। দমকলের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগে গিয়েছিল ওই শিল্পতালুকের রসায়নিক কারখানায়। মঙ্গলবার বেলা ১১টার নাগাদ আগুন লেগে যায় মহেশতলার মুখার্জি গেট সংলগ্ন পালান ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের একটি রসায়নিক কারখানায়। দুপুরের দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। আগুনের লেলিহান শিখা ও কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকা। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে কারখানাটি। ওই সময় কারখানায় ১২ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছিলেন। আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ৫ শ্রমিক। তাঁদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক শ্রমিকের অল্পবিস্তর চোটও লেগেছে বলে জানি গিয়েছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে আশেপাশের কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, একসময় কারখানার দেওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এলেও যত বেলা গড়াতে থাকে, ইঞ্জিনের সংখ্যা ততই বাড়তে থাকে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রোবটও নামানো হয়। এক সময় ইঞ্জিনের সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ টার মতো। পরে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে সেই সংখ্যা অবশ্য কমে চারটি ইঞ্জিনে এসে দাঁড়ায়। পকেট ফায়ারের নেভাতে ওই চারটি ইঞ্জিন কাজ চালিয়ে যায়। অবশেষে রাত ৯টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকলের ডেপুটি ডিরেক্টর সনৎকুমার মণ্ডল বলেন, ‘কারখানার কাছাকাছি জলাশয় না থাকায়, আগুন নেভাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছ। পরে একটি কারখানার দেওয়াল ভেঙে পাশের পুকুর থেকে জল সংগ্রহ করা হয়। কারখানাগুলিতে রাসায়নিক এবং ভোজ্যতেল থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে ভয়াবহ আকার নেয়৷ তবে এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’পুলিশ জানিয়েছে, এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মোট ৪টি কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে একটি স্যানিটাইজার ও অন্যটি নারকেল তেলের কারখানা ছিল। বাকি দু’টি রাসায়নিক তৈরির কারখানা।স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মহেশতলার ওই শিল্পতালুকে স্বল্প পরিসরের মধ্যে প্রায় আড়াইশো কারখানা রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া কারখানাগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে অভিযোগ। তবে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দমকল ও মহেশতলা থানার পুলিশ।