দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর হোগল নদীতে ডুবে গিয়েছিল পর্যটকদের বোট। সেই ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পর অবশেষে ওই বোটটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হল। ডুবে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন দু'জন। এদিন ওই দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁরা বোটের কর্মী ছিলেন। মৃত দু'জনের নাম জয়ন্ত সর্দার এবং বৃন্দাবন সর্দার। বোটের ভিতরে আটকে যাওয়ায় তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি। তার ফলে ডুবে মৃত্যু হয় তাঁদের। বোটের ভিতর থেকে ওই দু'জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় মাঝ নদীতে ডুবে গেল যাত্রীবোঝাই নৌকা, মৃত ১৮, নিখোঁজ কমপক্ষে ৭০ জন
দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল গত সোমবার। কালবৈশাখীর দমকা হাওয়ার ঝাপটায় ডুবে গিয়েছিল পর্যটকদের এই বোটটি। তাতে মোট পাঁচজন ছিলেন। তিনজন কোনওভাবে বোট থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও দু'জনে বোটের ভিতরে আটকে যান। স্থানীয়রা প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন, বোটের ভিতরে আরও দুজন আটকে রয়েছেন। ফলে বোট ডুবে যাওয়ার পরেই উদ্ধারের জন্য তৎপর হয় প্রশাসন। এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফের টিম গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার তল্লাশি চালাচ্ছিল। এর পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনার ন্যাজাট থেকে ডুবুরিদের একটি দল আনা হয়েছিল তল্লাশির জন্য। বোটটির সন্ধান পাওয়া গেলেও সেটিকে নদী থেকে তোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল।
দড়ি লাগিয়ে ট্যুরিস্ট বোটটি তোলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজ প্রথমে সফল হয়নি। শেষপর্যন্ত বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের উদ্যোগে ভাসমান পল্টুন জেটি ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়। এরপর শনিবার রাতে বোটটিকে তোলার জন্য দড়ি ও লোহার চেন ব্যবহার করা হয়। তার সাহায্যে বোটটি টেনে পাড়ের কাছে আনা হয়। পরে রবিবার সকালে ভাটার সময় বোটটিকে জল থেকে তোলা সম্ভব হয়। তার ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় নিখোঁজ দুই বোট কর্মীর দেহ।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, যেখানে বোট ডুবে গিয়েছিল সেই অংশ ১০০ ফুটের বেশি গভীর ছিল। প্রথমে স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ সফল হয়নি। পরে শেষমেশ উদ্ধার সফল হয়েছে। এদিন দুজনের দেহ উদ্ধার হতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।