অর্জুন সিংয়ের খাসতালুক ব্যারাকপুর। আর ওই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিজেপির নেতা–কর্মীরা গেরুয়া সংস্রব ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। আর নিজের গড়ে বিজেপিতে এমন ভাঙনে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন বাহুবলী নেতা। কারণ দল এবং দলীয় কাজ নীচুতলার নেতা–কর্মীদের উপরই টিকে থাকে। আর সেখানেই যদি ভাঙন দেখা দেয় তাহলে সংগঠন নড়বড়ে হয়ে যায়। বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কর্মীরা দল ছেড়ে দিলে বড় প্রভাব পড়বে সংগঠনে। এবার বীজপুরের বিধায়কের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন শতাধিক বিজেপি কর্মী। যদিও দলত্যাগীরা বিজেপির কর্মী নয় বলেই দাবি নেতাদের।
অর্জুন সিং নিজে হেরে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। সেখানে জিতে সাংসদ হয়েছেন পার্থ ভৌমিক। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে বিজেপির। সেটা এবার আরও তলানিতে চলে গেল। আসলে এই জেলাতেও তেমন কোনও প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি বিজেপি। তার উপর অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। ঠিকঠাক নেতৃত্ব জেলায় দেওয়ার নেতা নেই। এই সার্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ওই কর্মীরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। আর তার ফলে সংগঠন ধাক্কা খেল বিজেপির।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন স্টেশনগুলিতে চলছে টহলদারি, কেন্দ্রের নির্দেশে সতর্ক বিএসএফ
এই ঘটনার পর উত্তর ২৪ পরগনায় বড় ধাক্কা খেল বিজেপি। বাংলায় মাটি শক্ত করতে ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে সব দল। সেখানে এমন ধাক্কা লাগবে তা কল্পনাও করতে পারেনি বিজেপি। নানা ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসে বারবার তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেছে গেরুয়া শিবির। সেখানে অর্জুন সিংয়ের গড়েই বিজেপিতে ভাঙন দেখা দিল। গতকাল বীজপুর বিধানসভার অন্তর্গত মঙ্গলদীপ ভবনে বীজপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন শতাধিক বিজেপি কর্মী–সর্মথক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান শুভঙ্কর ঘোষ, হালিশহর টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রবীর সরকার এবং অন্যান্য নেতারা।
এই দলবদলের ঘটনা সামনে আসার পর বিজেপি বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। তাই এই জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘যাঁরা বিজেপি ছেড়ে দিয়ে যোগদান করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে তাঁদের কাউকেই আমরা চিনি না।’ পাল্টা বীজপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বক্তব্য, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নযজ্ঞে সামিল হওয়ার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁরা যোগদান করেছেন। আগামী দিনে বিজেপি আরও ভাঙবে।’ বিধানসভা নির্বাচনে এই কর্মীরা কাজ করবে বলেও জানিয়ে দেন বিধায়ক।