পুরুলিয়ার কোটশিলায় কুড়মি সমাজের হামলায় একাধিক পুলিশকর্মী জখম হলেন। কুড়মি সমাজের আন্দোলনের জেরে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছিল পুরুলিয়ায়। এই আবহে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সামাল দিতে রবিবার বিকেলে কোটশিলা স্টেশনে মোতায়েন ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সেখানে শিশু ও মহিলাদের সামনে রেখে পুলিশের উপর হামলা করার অভিযোগ ওঠে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে। এই আবহে পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পারেনি প্রাথমিক ভাবে। আর এর জেরেই জখম হন দুই আইপিএস অফিসার-সহ মোট ৫ জন পুলিশ কর্মী-আধিকারিক।পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আদাবাসীরা পুলিশের ওপর হামলা করলেও ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়নি। কোটশিলার রেললাইনে কুড়মি সমাজকে অবরোধ করতে দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ মোট ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে জিআরপিও গ্রেফতার করে বহু কুড়মি আন্দোলনকারীকে। ধৃতদের সকলকেই রবিবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হয়। পুলিশি তৎপরতায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের কোটশিলা স্টেশন ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে।এদিকে আদিবাসী কুড়মি সমাজের অভিযোগ, রেল অবরোধ রুখে দেওয়ার নামে তাদের উপর পুলিশ তাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। এই আবহে পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে সভা ও স্মারকলিপি কর্মসূচি সংঘঠিত করতে চলেছে কুড়মি সমাজ। আগামী ৫ অক্টোবর পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ওই সভার আয়োজন করা হবে। সেদিন ডিএম ও এসপি-র কাছে স্মারকলিপি দেবে কুড়মি সমাজ। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়, পুলিশের আঘাতে মাথা ফেটেছে এক শিশুর। এই বিষয়ে পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'শনিবার সন্ধ্যার আগে থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কোথাও কোনও অবরোধ হয়নি। ফলে কোন ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকেনি। আন্দোলনকারীরা শিশু এবং মহিলাদেরকে সামনে রেখে আমাদের উপর রেল লাইনের ট্র্যাকে থাকা পাথর ছুঁড়ে আঘাত করা হয়। সেই কারণেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে দেরি হয়। আমাদের বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হন। এদিকে যে শিশুর ছবিটি ভাইরাল হয়েছে, সেই বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু কোথায় কোন শিশু জখম হয়েছে, এই ব্যাপারে আমরা সকাল থেকে নানান খোঁজখবর করার পরেও কোনও কিছু খোঁজ পাইনি। অনুরোধ করছি কোন সহৃদয় ব্যক্তি যদি আমাদেরকে এই বিষয়টি জানান আমরা তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেব। কিন্তু অযথা বিভ্রান্তিমূলক যদি সমাজমাধ্যমে ছড়ানো হয় তাহলে আইনত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'