বুধবার গভীর রাতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দুই নার্সকে প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত দুই নার্সকে এক যুবতী অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকী বাইরে বের হলে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন: ওটি’তে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, চিকিৎসায় গাফিলতি, ২ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১২টা নাগাদ প্রসববেদনায় কাতর অবস্থায় কোয়েল মাঝি দাস নামে এক গৃহবধূকে ভর্তি করা হয়। তাঁর সঙ্গে পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছিলেন, যাঁদের মধ্যে তিনজন মহিলা। প্রসূতি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন নার্স সঞ্চিতা ক্ষেত্রপাল ও অমৃতা গড়াই। তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত লোকজনকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। কারণ এই বিভাগে রোগীর সঙ্গে একজন বা দু’জনের বেশি থাকার অনুমতি নেই। এই অনুরোধে ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর এক আত্মীয়া মারমুখী হয়ে ওঠেন। অভিযোগ, ওই যুবতী তখনই দুই নার্সকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন এবং প্রকাশ্যেই বলেন, ‘বাইরে বের হলে মেরে ফেলব তোদের।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীদের জানানো হলেও তারা তৎপরতা দেখায়নি বলে অভিযোগ। এমনকী, হাসপাতালের মধ্যেই থাকা পুলিশ ক্যাম্প থেকেও কেউ এগিয়ে আসেনি বলে নার্সদের অভিযোগ।
নার্স সঞ্চিতা ক্ষেত্রপাল বলেন, রাতে যখন ডিউটি করেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই চারপাশে নিরাপত্তার খুব প্রয়োজন হয়। সেখানে একজন মদ্যপ মহিলা কীভাবে ভিতরে ঢুকল? সেটাই বুঝতে পারছেন না। হুমকি পাওয়ার পরও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। আতঙ্কের কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নার্সদের হেনস্তার অভিযোগ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগেই এক নার্সকে চুলের মুঠি ধরে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। আবার একাধিকবার নার্সদের কোয়ার্টারে রাতের বেলায় মদ্যপ অ্যাম্বুলেন্স চালকদের উৎপাতের ঘটনাও ঘটেছে। তবু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ নার্সদের একাংশের। হাসপাতালের সুপার ডা. বিপ্লব মণ্ডল বলেন, ওই রাতে দু’জন নার্স ডিউটিতে ছিলেন। তাঁরা রোগীর সঙ্গে আসা অতিরিক্ত লোকজনকে বাইরে দাঁড়াতে বলেছিলেন। তখনই কিছু আত্মীয় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। বিষয়টি পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।