এখন তিনি বিজেপি শূন্য ডুয়ার্স গড়তে চান। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এসেছেন। কদিন আগেও বিজেপির সাংসদ ছিলেন। এখন তিনি প্রাক্তন। তবে হেরে গিয়ে নয়। বিজেপি টিকিট না দেওয়ায়। আর তারই প্রতিশোধ নিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। হ্যাঁ, তিনি প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ জন বারলা। এপ্রিল মাসেই জন বারলাকে তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিলে এবং সভায় দেখা যাবে বলে সূত্রের খবর। ‘২০২৬ বিজেপি ফিনিশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে সমতলে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান তিনি। আর তাই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ডুয়ার্সে বিজেপি গোহারা হারবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বারলা।
এই বিষয়ে ‘বর্তমান’ পত্রিকাকে টেলিফোনে জন বারলা একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এখন প্রাক্তন এই বিজেপি সাংসদ নয়াদিল্লিতে আছেন। সেখান থেকেই ওই সংবাদপত্রে জন বারলা টেলিফোনে বলেছেন, ‘আলিপুরদুয়ারে বিধানসভার পাঁচটি আসন আছে। আর ওই সব আসনেই বিজেপি হারবে। জলপাইগুড়ি জেলাতে বিজেপিকে কোনও আসনে জিততে দেব না। ডুয়ার্সে বিজেপিকে ফিনিশ করাই আমার লক্ষ্য।’ জন বারলা নয়াদিল্লিতে রয়েছেন কারণ তাঁর স্ত্রী অসুস্থ। নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে এই নেতার স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। তাই আগামী ১০ এপ্রিল বাড়ি ফিরবেন বারলা। তারপরই লড়াই শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘নিয়োগ প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব নয়’, সপাটে জবাব এসএসসি চেয়ারম্যানের
এই ডুয়ার্সকে এখন জন বারলা বিজেপি মুক্ত করতে চাইছেন। কারণ বিজেপির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক চটকে গিয়েছে। তবে এই বিজেপিমুক্ত ডুয়ার্স গড়ার ডাক দিতেই পাল্টা তোপ ধেয়ে এসেছে তাঁর দিকে। আর সেটা এসেছে তাঁর প্রাক্তন দল বিজেপি থেকেই। এই বিষয়েই বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিপ্লব দাসের বক্তব্য, ‘আমার মনে হয়, জন বারলা চাপে আছেন। তাই উল্টোপাল্টা বলছেন। বিজেপিকে ফিনিশ করতে গিয়ে বারলা নিজেই ফিনিশ না হয়ে যায়।’ তবে চা–বলয়ে জন বারলার একটা জনভিত্তি আছে সেটা সকলেই জানেন। এখন দেখার বিষয় জন বারলা আনুষ্ঠানিক পথে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন কিনা। আর কোন পদ পান।
জন বারলা তৃণমূল কংগ্রেসে এসে কাজ করতে শুরু করলে বিজেপির স্নায়ুর চাপ যে বাড়বে সেটা জেলার সকল নেতাদেরই জানা। তবে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার নাম না করে ‘বর্তমান’ পত্রিকাকে বারলা বলেছেন, ‘২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আমার বিরুদ্ধে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে কান ভাঙানি দিয়েছে। তাই আমাকে টিকিট দেয়নি। এখন ফল বিজেপি বুঝতে পেরেছে। লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে আড়াই লাখের জয়ের মার্জিন ৭৫ হাজারে নেমে এসেছে। মাদারিহাট বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি হেরে গিয়েছে। এবার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ডুয়ার্সে বিজেপিকে ফিনিশ করাই আমার লক্ষ্য। কারণ বিজেপি উন্নয়ন বিরোধী। এখানে আমায় হাসপাতাল করতে দেয়নি।’ এই নিয়ে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার কথায়, ‘জন বারলা আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও দলে যোগ দেননি। তবুও বিজেপি তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেছে। মান–সম্মান দিয়েছে। আর টিকিট না পাওয়ার জন্য সমানে তিনি দলের বিরুদ্ধে বলছেন। এটা ঠিক নয়।’