শ্বশুরবস্তাবন্দি দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্যবাড়ি যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক যুবক। তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ২২ দিন। পরিবার ছুটেছে থানায়, খোঁজ করেছে আত্মীয়স্বজনের কাছে, জায়গায় জায়গায় সন্ধান চললেও নিখোঁজ যুবকের সন্ধান মেলেনি এতদিন। অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার এক জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল তাঁর বস্তাবন্দি পচাগলা দেহ। ঘটনাস্থল রবীন্দ্রনগরের পাঁচুর গাজি পাড়া। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত যুবকের নাম তাজমুদ্দিন।
আরও পড়ুন: ১টা হাত নেই, জেলের দেওয়াল টপকে পালাল ধর্ষণ-খুনের দণ্ডিত, প্রশ্নের মুখে কেরল
ঘন জঙ্গলের ভিতরে স্থানীয়দের নজরে আসে একটি বড় বস্তা। দুঃসহ গন্ধে সন্দেহ হলে খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে বস্তা খুলতেই চমকে ওঠেন সকলে। সেখানে মেলে এক যুবকের পচাগলা দেহ। পরে পরিচয় নিশ্চিত করা হয় নিখোঁজ যুবক তাজুদ্দিন বলে। পুলিশ সূত্রে খবর, ১৬ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন তাজুদ্দিন। গন্তব্য ছিল শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। ঠিক পরদিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই তাঁর মোটরবাইক পড়ে থাকতে দেখা যায় মহেশতলার আকড়া স্টেশনের পাশে। সেই সময় রাজাবাগান থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিবারের সদস্যরা। বাড়ি না ফেরায় তখন থেকেই আতঙ্কে ছিলেন আত্মীয়রা। ধীরে ধীরে সন্দেহের তীর যায় এক ব্যক্তির দিকে। তাঁর নাম মিঠু। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, তাজুদ্দিনকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে মিঠু ও তাঁর সঙ্গীরা। তবে কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা। ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক বিবাদ না কি অন্য কিছু তা এখনও পরিষ্কার নয়।
পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে। বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেহটি ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেহের অবস্থা দেখে অনুমান, বহুদিন আগেই খুন করে বস্তাবন্দি করে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।তাজুদ্দিনের রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে রবীন্দ্রনগর জুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। প্রশ্ন উঠছে, কেন এমন নৃশংসভাবে খুন হতে হল এক যুবককে? কে বা কারা এর পিছনে?এই সব প্রশ্নের উত্তর আপাতত পুলিশের তদন্তের উপরই নির্ভর করছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।