বর্ষার মরশুমে প্রবল বৃষ্টির জেরে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তিলপাড়া ব্যারাজের ডিভাইড ওয়ালের ফাটল। মাস খানেক আগে যে ফাটল দেখা গিয়েছিল, তা শনিবার নাগাদ আরও প্রসারিত হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় জলের চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেচ দফতর। পাশাপাশি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ক্ষয় রোধে পরামর্শ নিতে রাজ্যের তরফে ডাকা হয়েছে বাঁধ বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন; মাইথন-পাঞ্চেত-তিলাইয়াকে কেন্দ্র করে বড় পরিকল্পনা!গড়ে তোলা হবে পর্যটন পরিকাঠামো
সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ব্যারাজ পরিদর্শনের পর বাঁধ বিশেষজ্ঞ জুলফিকার আহমেদ যে মত দেবেন, তার উপর ভিত্তি করেই পরবর্তী মেরামতির কাজ এগোবে। রাজ্য সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সেনগুপ্ত বলেন, জলস্তর কমাতে জল ছাড়ার হার বাড়ানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এতে চাপ কিছুটা কমবে। তবে পুরো বিষয়টাই নির্ভর করছে আবহাওয়া এবং বিশেষজ্ঞের মতামতের উপর।
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাস থেকে তিলপাড়া ব্যারাজের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্ষা শুরু হতেই জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় তা বাধা পায়। গত ২৮ জুন ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়তে হয়, যার ফলে ব্যারাজের ডাউন স্ট্রিমে চাপ বেড়ে যায় এবং ৪ ও ৫ নম্বর লক গেটের মাঝে থাকা ডিভাইড ওয়ালে ফাটল দেখা দেয়। বর্তমানে সেই ফাটলের তলায় মাটি ও বালির ক্ষয় হতে শুরু করেছে, তৈরি হয়েছে গর্তও।
সতর্কতা হিসেবে ব্যারাজ সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। শনিবার থেকেই ব্যারাজের দু’প্রান্তে ব্যারিকেড বসানো হয়, ভারী যান ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। প্রথমে খালি বাস চলাচল চললেও এখন শুধুমাত্র ছোট গাড়ি ও বাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে খালি বাস চলাচলও সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। বীরভূম জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলার সঙ্গেও সমন্বয় চলছে। সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন সকাল থেকে ১৪,০০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। তবে প্রবল বর্ষণের পরিস্থিতিতে জল ছাড়ার হার আরও বাড়াতে হতে পারে। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, কাজ কতটা এগোবে, তা নির্ভর করছে আবহাওয়ার উপর। তবে, এই মুহূর্তে ব্যারাজের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগই সবচেয়ে বেশি।