আত্মহত্যা না কি পরিকল্পিত মৃত্যু? উত্তর খুঁজতে কবর থেকে দেহ তুলে পাঠানো হল ময়নাতদন্তে। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের ছয়ঘরা ক্যানেল এলাকায় ২৫ বছর বয়সি গৃহবধূর দেহ কবর থেকে তোলা হয়। বধূর স্বামীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার মৃতদেহ তোলা হয় কবরে থেকে। ঘটনায় আটক করা হয়েছে প্রতিবেশী এক যুবককে। তাঁর সঙ্গে মৃতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলেই দাবি পরিবারের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে ভেসে আসছে শিশুর কান্না, দরজা খুলতেই মহিলার নিথর দেহ, রহস্য কোচবিহারে
জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ১০ জুলাইয়ের। ঘরের ভিতর ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় রেশমা খাতুনের নিথর দেহ। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেদিনই নিয়ম মেনে কবরস্থ করা হয় দেহ। পরিবারের কারও পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ তোলা হয়নি। ফলে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি আত্মহত্যা বলেই ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু এই মৃত্যুর খবর পেয়ে রেশমার স্বামী রাহেদুর আলি ১২ জুলাই চেন্নাই থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে স্ত্রীর মোবাইল ঘাঁটতেই বেরিয়ে আসে বিস্ফোরক তথ্য। মোবাইলের মেসেজ ও কল লিস্ট দেখে তিনি জানতে পারেন, প্রতিবেশী আব্দুল রহিমের সঙ্গে রেশমার সম্পর্ক ছিল। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, মৃত্যুর দিন রাতেও রহিম এসেছিলেন রেশমার বাড়িতে।
এই তথ্য সামনে আসতেই রাহেদুর ইটাহার থানায় স্ত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেন রহিমের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার প্রশাসনের উপস্থিতিতে কবর খুঁড়ে তোলা হয় রেশমার দেহ, পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। উপস্থিত ছিলেন ইটাহারের বিডিও দিব্যেন্দু সরকারও।
স্থানীয়দের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, শুরুতেই কেন পুলিশকে জানানো হয়নি এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা? যদিও মৃতার এক আত্মীয় জানান, তাঁরা কোনও সম্পর্কের কথা জানতেন না। স্বামী বাইরে থাকেন, বাবাও ছিল না। আত্মহত্যাই মনে হয়েছিল, তাই শেষকৃত্য করা হয়েছিল। এখন পুলিশই গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখুক।
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজন হলে আরও কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে।