গত বছর থেকেই রাজ্য সরকারি উদ্যোগী হয়েছে প্রসুতি মৃত্যুর হার কমানোর বিষয়ে। স্বাস্থ্য দফতর প্রাথমিক ভাবে মনে করছিল টিনএজার বা তরুণী প্রসূতির ক্ষেত্রে মৃত্যুহার বাড়ছে। এবার সামনে এলো আরও একটি বিষয়। অপ্রয়োজনীয় সিজার করার ফলেও ঝরে যাচ্ছে বহু তরতাজা প্রাণ, মনে করছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসূতির ক্ষেত্রে সিজার স্বভাবিক। কিন্তু এই প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। সিজার বা যে কোনও অস্ত্রপ্রচারই সংক্রমণ, প্রসূতি ও শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করে বলে মনে করা হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এবার মেনেছে ‘প্রাণঘাতী’ সিজারের সংখ্যায় লাগাম টানতে।
রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর হার কমাতে এবার বিশেষ নজর দিল রাজ্য সরকার। মৃত্যুহার কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন পর্যাপ্ত তথ্য । তাই সরকারি হসপাতালগুলির পাশাপাশি বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিতে প্রসুতি মৃত্যু নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। দেখা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিতেও প্রসুতি মৃত্যুর হার বেশি এবং এর মূল কারণ অহেতুক সিজার। শহর কিংবা গ্রামীণ অঞ্চল, সর্বত্র দেখা যাচ্ছে একই প্রবণতা।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, অডিট মানে শাস্তি নয়। অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধ করে প্রসূতি মৃত্যুহার কমানোই আমাদের উদ্দেশ্য। তাই সকলকে সতর্ক করতে অডিট শুরু হয়েছে। তিনমাস আগের এক বৈঠকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অত্যাধিক প্রসূতি মৃত্যুহার নিয়ে সতর্ক করা হয়। সে কারণেই এই পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, জুন মাস থেকে প্রসবের দৈনিক তথ্য মাতৃ-মা পোর্টালে লিপিবদ্ধ করার কাজও শুরু করেছে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল।
প্রসূতি মৃত্যুর হার কমাতে চলতি মাস থেকে শহরের সরকারি হাসপাতালগুলি ও ২৫টি বেসরকারি নার্সিংহোম পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সূত্রের খবর সেখানেই ধরা পড়েছে সমস্যা। অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় সিজারের কারণেই বাড়ছে প্রসূতিদের মৃত্যুহার। স্বাস্থ্যকর্তাদের পরামর্শ অকারণে সিজার করার প্রবণতাতে লাগাম দিতে হবে। এছাড়াও, সিজার পরবর্তী সেবা শুশ্রূষার বিষয়েও যাতে বাড়তি নজর দেয় হাসপাতালগুলি সেবিষয়ে সচেতন করা হয়।
যদিও কোনপথে সিজারের প্রবণতা কমানো সম্ভব জানা নেই কারও। বহু স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ যেমন মনে করেন আজকের সময়ে অনেক সময়ে প্রয়োজনীয়তার জায়গা থেকেই সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং যার হার ক্রমবর্ধমান।