দুর্গাপুজো বাঙালির প্রিয় উৎসব। এই উৎসব বঙ্গজীবনের সবচেয়ে বড় উৎসব বললেও হয়তো ভুল বলা হয় না। তাই পুজোর আগে সিংহাসনে মঙ্গলঘট স্থাপন করা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং শুভ কাজ, যা হিন্দু ধর্মানুসারে বিশেষ ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। এই প্রথাটি কেবল কোনো রীতিনীতি নয়, এর পেছনে গভীর আধ্যাত্মিক এবং বৈজ্ঞানিক তাৎপর্যও রয়েছে।
কেন মঙ্গলঘট স্থাপন করা হয়?
মঙ্গলঘটকে মূলত গণেশ এবং লক্ষ্মী দেবীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এই ঘটটি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকারী শক্তি এবং জীবন ধারণের মূল উৎস, অর্থাৎ জলের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন - গণেশ চতুর্থীতে এভাবে স্থাপন করুন মূর্তি, শত্রুও আটকাতে পারবে না আর্থিক সমৃদ্ধি
ধন ও সমৃদ্ধি: মঙ্গলঘট স্থাপন করলে ঘরে সুখ-শান্তি এবং সমৃদ্ধি আসে। এটি মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদস্বরূপ, যা পরিবারের আর্থিক উন্নতি ঘটায়।
ইতিবাচক শক্তি: ঘটের মধ্যে জল, আম্রপল্লব, নারকেল এবং মুদ্রা স্থাপন করা হয়। এই উপাদানগুলো একত্রিত হয়ে এক শক্তিশালী ইতিবাচক শক্তি তৈরি করে, যা বাড়ির সমস্ত নেতিবাচক শক্তি দূর করে।
পবিত্রতা ও শুদ্ধি: মঙ্গলঘট স্থাপন করলে পুজোর স্থান এবং তার চারপাশের পরিবেশ পবিত্র হয়। জল, যা জীবনের প্রতীক, তার মাধ্যমে সমস্ত অপবিত্রতা দূর হয়ে যায়।
বাধা দূরীকরণ: এটি বিশ্বাস করা হয় যে মঙ্গলঘট স্থাপন করলে গণেশ দেবতা সন্তুষ্ট হন এবং জীবনের সমস্ত বাধা দূর করেন। বিশেষত পুজোর আগে এটি করলে পুজো নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।
আধ্যাত্মিক সংযোগ: এই ঘটটি বাড়ির সদস্যদের মধ্যে আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপন করে। এটি তাদের মনকে শান্ত করে এবং পুজোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।
আরও পড়ুন - ক্যালেন্ডার রাখার ছোট ভুলেই তিথিক্ষণের শুভ প্রভাব যায় কমে? কী বলছে বাস্তুশাস্ত্র
কীভাবে মঙ্গলঘট স্থাপন করবেন?
১. প্রথমে একটি তামার বা মাটির ঘট নিন এবং তার মধ্যে গঙ্গাজল অথবা পরিষ্কার জল ভরে দিন।
২. জলের মধ্যে সামান্য চাল, একটি সুপারি, একটি বা দুটি মুদ্রা এবং কয়েকটি আম্রপল্লব রাখুন।
৩. ঘটের মুখে একটি লাল কাপড় দিয়ে একটি নারকেল স্থাপন করুন। নারকেলটি যেন সোজা থাকে।