চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন পালিত হয় নীল ষষ্ঠীর ব্রত। এটি হলো বাংলা বছরের শেষ ব্রত। এই দিন ঘরে ঘরে মায়েরা সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই ব্রত পালন করে থাকে। এই দিন মা ষষ্ঠীর পাশাপাশি এই পুজো নিবেদন করা হয় ভোলেনাথকে। মায়েরা সারাদিন নির্জলা উপবাস করে শিব পুজো করে থাকেন। ১৩ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার এই বছর নীল ষষ্ঠীর ব্রত।
আসুন জেনে নিই এই দিন ভোলেনাথকে কী কী দিয়ে পুজো করে সন্তুষ্ট করতে পারবেন। শিব পুজোয় বেলপাতা অপরিহার্য। বেলপাতা ছাড়া শিব পুজো হয় না। তাই অবশ্যই বেল পাতা প্রয়োজন। বেল পাতা যেন কাটা ফাটা না থাকে। এছাড়া এই দিন শিব ঠাকুরকে পাঁচ রকম ফল নিবেদনের রীতি রয়েছে। যেহেতু এটা গরমকাল তাই ডাব শসা তরমুজ প্রভৃতি জলজ জাতীয় ফল ভোলেনাথ কে নিবেদন করতে পারেন।
পুজোর জন্য লাগবে দুধ দই ঘি মধু গঙ্গাজল। আপনারা পাঁচটি জিনিস আলাদা আলাদা করে ভোলেনাথের মাথায় ঢেলে শিবের অভিষেক পালন করতে পারেন অথবা একত্রে মিশিয়েও ভোলেনাথের অভিষেক করতে পারেন। এই দিন কিন্তু সন্ধে অবধি উপবাস থেকে শিব পুজো করে উপবাস ভঙ্গ করবেন। শিবের মাথায় জল ঢেলে আতপ চাল চন্দন সুগন্ধি ইত্যাদি সহযোগে ফুল দিয়ে পুজো করে তারপর নৈবেদ্য নিবেদন করবেন। ফুলের মধ্যে আকন্দ ধুতরা অপরাজিতা ভোলেনাথের খুব প্রিয়। এই দিন এই ফুলগুলি নিবেদন করলে ভোলেনাথ খুব খুশি হন।
ব্রতের সময় বেশ কয়েকটি ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমত এই দিন নির্জলা উপবাস করতে হয়। আমিষ বা ভাজা জাতীয় কোনও খাবার এই দিন গ্রহণ করা যায় না। নুনও এই দিন পরিত্যাগ করতে হয়। ব্রতের নিয়ম অনুসারে সন্ধব লবণ গ্রহণ করা যায়, তবে পুজোর পর সাবু ফল এগুলো খেয়ে ব্রত পালন করতে হয়। এই দিন কোনও সাদা মিষ্টান্ন ভেলেনাথকে নিবেদন করতে পারেন। ব্রতের নিয়ম অনুসারে এই দিন ঠান্ডা জাতীয় কোনও খাবার খাবেন। গরম খাবার খাওয়া যায় না। অনেক মানুষ সন্তান লাভের জন্য এই ব্রত করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে নীল ষষ্ঠীর ব্রত করলে সন্তানের অকাল মৃত্যু হয় না, সন্তান সুস্থ থাকে, ভালো থাকে, সন্তানের কোনও রূপ অমঙ্গল হয় না। সন্তানের দীর্ঘায়ু কামনা করে মায়েরা এভাবে পালন করে এই ব্রত। এই দিন শিবের মাথায় ডাবের জল ঢালারও রীতি রয়েছে। এই ব্রত করলে সন্তানের মঙ্গল হবে এই কামনা থেকে মায়েরা নীল ষষ্ঠীর উপবাস করে থাকেন। সন্ধ্যায় মায়েরা সন্তানের মঙ্গল কামনার্থে নীলের ঘরে বাতি অর্থাৎ প্রদীপ জ্বালিয়ে নীল ষষ্ঠীর ব্রত উদযাপন করেন।