খেলার মাঠে যে মানুষটা নামলে চারিদিক গর্জন করে ওঠে তিনি হলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। শুধু খেলার মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তিনি সমানভাবে পরিচিত। এছাড়াও ক্রিকেটপ্রেমীদের অন্যতম আইডল মানুষ তিনি। ধোনির এই উত্থানের পিছনে যে অবদান লুকিয়ে আছে তা হয়তো অনেকেরই অজানা। এমনকী ধোনিকে নিয়ে যিনি ব্লকবাস্টার ছবি তৈরি করেছিলেন তিনিও বলতে পারবেন না সেই ছবিতে ধোনির সব অজানা গল্প তুলে ধরতে পেরেছেন। তাঁর ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি যে অবদান ছিল তা হয়তো কখনও ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করার যাবে না। তবে ভারতীয় ক্রিকেটের জগতে ধোনির মতো একই রকম বা তাঁর থেকেও একটু বেশি যিনি প্রভাব ফেলতে পেরেছে। তিনি আর কেউ নন ধোনির শৈশবের নায়ক সচিন তেন্ডুলকর।
ধোনি এবং তেন্ডুলকরের ক্রিকেটীয় দক্ষতার তেমন মিল ছিল না। কিন্তু দু'জনেই নিজস্ব ভাবে তাদের খেলাকে চালিয়ে যান। মাঠের ভিতর আচরণ আলাদা হলেও মাঠের বাইরে তাদের আচার-আচরণ ছিল অনেকটাই একই রকম। হয়তো বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের মর্যাদার পেছনে এটি একটি বড় কারণ হতে পারে। যদিও বর্তমানে তারা দুজনেই জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু তবুও তাদের মাঠের প্রতি আকর্ষণ ও মনোযোগ একইভাবে থেকে গিয়েছে। কিন্তু ধোনির সঙ্গে সবসময়ই ‘হোয়াট নেক্সট’ এই বিষয় জরিয়ে থাকে। অর্থাৎ তিনি সব সময় ভাবতে থাকেন এর পর কী করা যেতে পারে। ভারতের প্রাক্তন উইকেট কিপার এই কারণেই হয়তো সকলের থেকে আলাদা। আর এই কারনে তিনি সেরা অধিনায়কদের মধ্যে একজন।
ধোনির জন্ম রাঁচিতে। তিনি খুব কষ্ট করেই এই ক্রিকেট জগতে সফলতা পেয়েছেন। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের গল্প রূপকথা থেকে কম কিছু নয়। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপের সময় তিনি টিভিতে যুবরাজ সিং, বীরেন্দ্র সেহওয়াগ এবং হরভজন সিংদের মতো ক্রিকেটারদের দেখেন। তারপর চার বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী সংস্কারে তিনি এই খেলোয়াড়দের সঙ্গেই এক ঐতিহাসিক জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
যদিও ধোনি এখনও সমানভাবে প্রশংসিত। তিনি এখনও আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের নেতৃত্ব দেন। তবে ভারতীয় ক্রিকেটে ধোনির অভিষেক হয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। তবে তার মোড় ঘুরেছিল যখন তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে। তাঁর এই কেরিয়ার গড়ার পিছনে রয়েছে অনেক অজানা ও অগণিত গল্প। সৈয়দ সাবা করিম তা সম্প্রতি প্রকাশ্যে আনেন। প্রথম ধোনির সঙ্গে দেখা করার মুহূর্তের ঘটনাটি। সেই সময় ধোনি রঞ্জি ট্রফিতে বিহারের হয়ে নির্বাচিত হন।
সৈয়দ সাবা করিম জিও সিনেমাতে বলেছেন, 'আমি যখন ধোনিকে প্রথম বার দেখি তখন ও রঞ্জি ট্রফিতে ছিল। ও তখন থেকে ব্যাটিং এবং কিপিং দুটোই করতো। ও বিহারের হয়ে খেলত। ধোনির ব্যাটিং উজ্জ্বলতা যেমন ছিল আজও আমরা সেই উজ্জলতা দেখতে পাই। তিনি স্পিনার বা পেস বোলারদের বিরুদ্ধে বড় বড় শট খেলত। তারপর আমরা অনেক একসাথে খেলেছি। আমরা যখন ফোনে ম্যাসেজ করতাম তখন ওইসব বিষয়েই কথা বলতাম। একবার আমরা তাকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে ছিলাম। কারণ ওর ব্যাটিং দক্ষতা ছিল দুর্দান্ত। এছাড়াও ও অনেক তাড়াতাড়ি রান পায়। আর এরপরেই এমএস ধোনির জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু করে।'
সেই সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন এবং করিম ধোনি সম্পর্কে প্রাক্তন বিসিসিআই সভাপতির সঙ্গে কথোপকথনের কথা স্মরণ করেন। করিম বলেন, ‘সেখান থেকে ধোনির কেরিয়ারে একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আমার মনে আছে আমি তখন কলকাতায় ছিলাম, আর সৌরভ ছিল অধিনায়ক। আমি ওর সাথে দেখা করতে যাই এবং আমি ওকে বলি যে, এক কিপার আছে যার ভারতীয় দলে আসা উচিত কারণ সে খুব ভালো ব্যাটিং করছিল এবং একজন নিরাপদ কিপার ছিল। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা পাকিস্তান সফরের ঠিক আগে সৌরভ এমএস খেলা দেখেনি এবং সেই সফরের জন্য তাকে নির্বাচিত করা হয়নি। কিন্তু সে তারপরই ভারতীয় দলে সুযোগ পায় মাহি।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।