ভারতে ‘অপারেশন সিঁদুর’র পর থেকেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির সেদেশের লাইমলাইটে। যুদ্ধে হারা পাকিস্তান, এই সেনাপ্রধানকে পদোন্নতি দিয়ে ফিল্ড মার্শাল করে দেয়। কিছুদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে বসতে আমেরিকায় উড়ে যান মুনির। উল্লেখ্য, কোনও পাকিস্তানি নেতা মন্ত্রী, এই ভোজে যোগ দেননি, বরং সেদেশের সেনা চিফ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যোগ দেন মধ্যাহ্নভোজে। সব মিলিয়ে প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি ধীরে ধীরে ইসলামাবাদের ক্ষমতার অলিন্দে রাওয়ালপিন্ডির (পাকিস্তানের সেনা হেডকোয়ার্টার) দাপট বাড়ছে? চর্চা শুকু হয়, তাহলে কি পাকিস্তানে তাবড় ক্ষমতার পথে মুনির? ঠিক যেমনটা পরভেজ মুশারফের সময় ঘটেছিল? এরই মাঝে এল ইসলামাবাদের জবাব।
জল্পনা চলছিল যে, সম্ভবত পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারিকে সরিয়ে সেদেশের রাষ্ট্রপতির গদিতে বসতে পারেন সেনাপ্রধান আসিম মুনির। তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, এই সমস্ত জল্পনা হচ্ছে, ‘গুজব’, ‘দুষ্ট প্রচার’। তিনি আরও বলেছেন,'এই বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণার পিছনে কারা রয়েছে সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত'। নাকভি তাঁর এক্স পোস্টে লেখেন,'আমরা সম্পূর্ণরূপে অবগত যে রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং সেনাপ্রধানকে লক্ষ্য করে এই বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারের পিছনে কারা রয়েছে।' তিনি আরও জানান,'আমি স্পষ্টভাবে বলেছি যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে বলা বা রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণের জন্য আগ্রহী সেনাপ্রধান এমন কোনও ধারণার অস্তিত্বই নেই। এই সম্পর্কে কোনও আলোচনা হয়নি।' তিনি এও জানান, যে পাকিস্তানের সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে ভালো সম্পর্কে রয়েছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি জারদারি। তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির আসনে থাকা প্রেসিডেন্ট জারদারিকে উল্লেখ করে বলেন, তিনি বলেছেন, ' আমি জানি কে এই মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে, কেন তারা তা করছে এবং কারা এই প্রচার থেকে লাভবান হচ্ছে।' নাকভি বলছেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের ‘একমাত্র লক্ষ্য’ পাকিস্তানের শক্তি এবং স্থিতিশীলতা, ‘অন্য কিছু নয়’।
ইসলামাবাদের তরফে নাকভির বার্তা,'এই আখ্যানের সাথে যাঁরা জড়িত তাঁরা যা ইচ্ছা তা করে নিন বিদেশি এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগ সাজোশ করে, আমরা পাকিস্তানকে শক্তিশালী করতে যা করার তাই করব।'
প্রসঙ্গত, আসিম মুনিরকে ২০২২ সালে সেনাপ্রধানের পদ দেয় পাকিস্তান। এরপর সদ্য ২০২৫ সালে ভারত, পাকিস্তান সশস্ত্র সংঘাতে কেঁপে ওঠা পাকিস্তানের সেনার প্রধান মুনিরকে ফিল্ড মার্শালের পদ দেয় ইসলামাবাদ।ক্রমেই পাকিস্তানের তাবড় প্রভাবশালী হিসাবে মুনিরের নাম উঠতে শুরু করেছে। এদিকে, পাক তখতে রাষ্ট্রপতির পদে রয়েছেন আসিফ জারদারি। তিনি প্রাক্তন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত বেনজির ভুট্টোর স্বামী। তাঁর পার্টি পিপিপি, শেহবাজ শরিফ সরকারকে পাক প্রশাসনে আসতে রাজনৈতিক জোট সমর্থন দিয়েছে। তারপরই বিলাওয়াল ভুট্টোর বাবা তথা পিপি নেতা জারদারি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির তখতে রয়েছেন ৫ বছরের মেয়াদে।