চলতি আইপিএলে পরপর জয় তুলে নিয়ে ছন্দে ফিরেছিল কলকাতা। রাজস্থানের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল ঘরের মাঠে। সুতরাং, হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে সঞ্জু স্যামসনদের টেক্কা দিতে পারত কেকেআর। তবে বাস্তবে দেখা যায় উল্টো ছবি। নিজেদের ডেরায় নাইট রাইডার্সই কার্যত আত্মসমর্পণ করে রাজস্থানের কাছে। আগাগোড়া দাপট দেখিয়ে যশস্বী-স্যামসনরা বিধ্বস্ত করেন নীতীশ রানাদের।
ইডেনে রাজস্থানের কাছে হারের জন্য কেকেআরের একাধিক ভুল-ভ্রান্তিকে দায়ি করা যায়। তবে সবদিক বিবেচনা করলে এটা মেনে নিতেই হয় যে, ভুল ছিল কেকেআরের পরিকল্পনায়, শুধু প্রয়োগ কৌশলে নয়। সুতরাং, এক্ষত্রে ব্যর্থতার জন্য কলকাতার থিঙ্কট্যাঙ্ককেও দায়ী করতে হয়, শুধু মাত্র ক্রিকেটারদের নয়। প্রশ্ন ওঠা উচিত চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতদের ছকে দেওয়া গেম প্ল্যান নিয়েও।
প্রথমত, ইডেনে স্পিন অস্ত্রে রাজস্থানকে বধ করতে চায় কলকাতা। পিচে স্পিনারদের জন্য সাহায্য রয়েছে ধরে নিয়ে একগাদা স্পিনারে দল সাজায় কেকেআর। সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী, সুয়াশ শর্মার সঙ্গে নীতীশ রানা নিজেও বল করছেন টুর্নামেন্টে। সেই সঙ্গে তারা মাঠে নামায় অনুকূল রায়কে। সুতরাং, পাঁচজন স্পিনারকে দিয়ে বাজিমাত করতে চায় কলকাতা। তবে তারা যে বিষয়গুলি খেয়াল করেনি তা হল-
১. সুনীল নারিন ধারাবাহিকভাবে উইকেটহীন। তিনি পরিচিত ছন্দে নেই মোটেও।
২. পিচে বল ঘুরলে যে নিজেদের ব্যাটিংকেও শক্তিশালী করতে হবে, সেটাই মাথায় আসেনি রানাদের। প্রতিপক্ষ শিবিরের যুজবেন্দ্র চাহাল, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো আন্তর্জাতিক মানের স্পিনাররা অনুকূল পিচ পেলে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পায় কলকাতা।
৩. রাজস্থানের ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই নেটে অশ্বিন-চাহালদের মোকাবিলা করছেন। সুতরাং, স্পিনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সড়গড় যশস্বীরা। তাই তাঁদের স্পিন অস্ত্রে ঘায়েল করতে চাওয়ার পরিকল্পনা বুমেরাং হয়ে আঘাত করে কেকেআর শিবিরেই। সুয়াশ-অনুকূলরা আর যাই হোন, এখনও প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়ার মতো জায়গায় উঠে আসতে পারেননি। অন্তত এখনই অশ্বিন-চাহালদের থেকেও ভয়ঙ্কর বলে বিবেচিত হবেন না কেউই।
সুতরাং, রাজস্থানকে স্পিন অস্ত্রে ঘায়েল করতে গিয়ে নিজেরাই চাহালের কাছে অত্মসমর্পণ করে কেকেআর। তাছাড়া এত বিশেষজ্ঞ স্পিনার থাকতে পার্টটাইমার স্পিনার দিয়ে বোলিং আক্রমণ শুরু করার কথা কীভাবে মাথায় আসে নীতীশ রানার, সেটাও একটা রহস্য।
সর্বোপরি কেকেআর যে পিচ পড়তে ভুল করেছিল, সেটা বোঝা যায় ম্যাচের গতিপ্রকৃতি দেখেই। শিশিরের সমস্যা যে তেমন একটা থাকবে না, সেটা বুঝতে পারে রাজস্থান শিবির। শুকনো পিচে বল থমকাবে, সেটা অনুমান করা এমন কিছু কঠিন নয়। তা সত্ত্বেও সঞ্জু স্যামসন টস জিতে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন এবং রাজস্থান মুরুগান অশ্বিনের মতো স্পিনারকে বসিয়ে কেএম আসিফের মতো পেসারকে মাঠে নামায়।
পিচে যদি স্পিনারদের জন্য বিস্তর সাহায্য থাকে, তাহলে রাজস্থান একজন স্পিনারকে বসিয়ে দেওয়ার সাহস দেখাত না এবং রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিত না। ট্রেন্ট বোল্ট, সন্দীপ শর্মা, কেএম আসিফরা উইকেট তুলে বুঝিয়ে দেন, এই পিচে পেসারদের দিয়েও কাজ চালানো যেত। সুতরাং ইডেনের পিচে স্পিনারদের জন্য সাহায্য থাকলেও, তা কতটা কাজে লাগানো যাবে, সেটাই উপলব্ধি করতে পারেনি কেকেআর। শেষমেশ ম্যাচ হেরে যার মাশুল দিতে হয় নাইট রাইডার্সকে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক http://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।