একদিকে, যেমন সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে মন্দির মসজিদ বিতর্ক নিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, ঠিক তাঁর উল্টোদিকে হেঁটে সনাতন ধর্ম নিয়ে বড় কথা বললেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি সনাতন ধর্মকে ভারতের জাতীয় ধর্ম বলে মন্তব্য করে প্রতিটি নাগরিককে এটি রক্ষা করতে এগিয়ে আসার জন্য জোর দিয়েছেন। অযোধ্যার আশরাফি ভবন আশ্রমে ১০৮ শ্রীমদ ভাগবত পাঠ ও পঞ্চ নারায়ণ মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন আদিত্যনাথ।
আরও পড়ুন: ‘পাপের শাস্তি! যারা ধর্মীয়স্থানকে অপবিত্র করেছে তাদের বিনাশ হয়েছে,’ বললেন যোগী
মহাযজ্ঞের সময় মুখ্যমন্ত্রী আচার-অনুষ্ঠান সম্পাদন করেন। বৈদিক মন্ত্রের সঙ্গে অর্ঘ্য নিবেদন করেন এবং উত্তরপ্রদেশের জনগণের সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের একটি বিবৃতি অনুসারে, সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সনাতন ধর্ম ভারতের জাতীয় নীতির প্রতিনিধিত্ব করে এবং এটি রক্ষা করা সকল নাগরিকের কর্তব্য। ধর্ম ও সংস্কৃতি কীভাবে সমাজে ইতিবাচক দিক, সম্প্রীতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখে তা তিনি তুলে ধরেন।
এদিন মুঘল শাসনের সময় পবিত্র মন্দিরগুলিতে আক্রমণের কথা উল্লেখ করে আদিত্যনাথ বলেন, ‘যারা এই পবিত্র স্থানগুলিকে অপবিত্র করেছিল তারা শেষ পর্যন্ত পতনের মুখোমুখি হয়েছিল।’ তিনি মুঘল শাসক ঔরঙ্গজেবের বংশধরদের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমানে তাদের বংশধরদের এমনই খারাপ দুর্দশা যে তাদের মধ্যে কিছু রিকশা চালাচ্ছে। তাদের পূর্বপুরুষদের ধ্বংসাত্মক কর্মের ফল ভোগ করতে হচ্ছে তাদের।’ তিনি বলেন, তাদের পূর্বপুরুষরা যদি সৎভাবে কাজ করত এবং মন্দির ভাঙা থেকে বিরত থাকত তবে আজ তাদের এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
মুখ্যমন্ত্রী সকল ভারতীয়কে সনাতন ধর্ম রক্ষা ও সংরক্ষণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এই শাশ্বত ধর্মকে সম্মান করা মানবতার সুরক্ষা এবং দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করার জন্য অত্যাবশ্যক।’ তিনি অতীতের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এর পাশাপাশি ঐতিহ্য এবং উন্নয়নের সামঞ্জস্যের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অযোধ্যায় চলমান কাজগুলি তুলে ধরেন। এছাড়া, শহরের প্রাচীন গৌরব পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি রাম মন্দির নির্মাণ এবং অযোধ্যার উন্নয়নকে এই কাজের কৃতিত্ব হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবার অযোধ্যায় তিনি যে যজ্ঞে যোগ দিয়েছিলেন সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে, যোগী বলেন, এটি স্ব-শুদ্ধি এবং পরিবেশগত শুদ্ধির জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসাবে কাজ করেছে। এমনকী এটি সনাতন ধর্মকে রক্ষা করে এবং সমাজের মধ্যে ইতিবাচক শক্তিকে উৎসাহিত করে।