হাড়হিম হায়দরাবাদ। এক মহিলাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে প্রেসার কুকার দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে এবং ছুরি-কাঁচি দিয়ে গলা কেটে খুন করে পালিয়ে গেল চোরেরা। শুধু তাই নয়, দুই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ওই মহিলাকে নৃশংসভাবে হত্যার পর তাঁর বাড়ি থেকে যাবতীয় জিনিসপত্র লুটপাট করে। এরপর মহিলার বাথরুমে স্নানও করে এবং শেষে তাঁদের রক্তমাখা পোশাক মহিলার দেহের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে তেলাঙ্গানায়।
আরও খবর-চাকরির টোপ দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োগ! রাশিয়া ভ্রমণে ভারতীয়দের সাবধান-বার্তা MEA-র
ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের গেটেড কমিউনিটিতে। যা কিনা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত মহিলার নাম রেণু আগরওয়াল। তার বয়স ৫০ বছর। তিনি স্বামী এবং ছেলের সঙ্গে আইটি হাব সাইবারাবাদের গেটেড কমিউনিটির সোয়ান লেক অ্যাপার্টমেন্টের ১৩ তলায় থাকতেন। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ রেণু আগরওয়ালের স্বামী এবং তাদের ২৬ বছর বয়সি ছেলে কাজের জন্য বেরিয়ে যান। তাদের একটি স্টিলের ব্যবসা রয়েছে।এরপর সন্ধ্যে ৫টা নাগাদ, রেণু আগরওয়ালকে ফোন করেন তাঁর স্বামী। কিন্তু ফোন বেজে যায়, স্ত্রী সাড়া দেননি। এরপর রেণুর এমন অস্বাভাবিক আচরণে অবাক হয়ে মিস্টার আগরওয়াল স্ত্রীর খোঁজ নিতে দ্রুত তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছন। কিন্তু ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। এরপর তিনি একজন প্লাম্বারকে ডেকে বাড়ির দরজা ভাঙেন। তারপরেই ঘরে ঢুকে দেখতে পান তাঁর স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন। যা দেখে চমকে যান মিস্টার আগরওয়াল। তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেন তিনি।
আরও খবর-চাকরির টোপ দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়োগ! রাশিয়া ভ্রমণে ভারতীয়দের সাবধান-বার্তা MEA-র
খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এরপর পুলিশ এসে রেণু আগরওয়ালের দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠান এবং তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা রেণু আগরওয়ালের হাত-পা বেঁধে প্রেসার কুকার দিয়ে বারবার আঘাত করে তাঁকে খুন করে। এরপর ছুরি ও কাঁচি দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেয়। তারপর তারা বাড়ি লুট করে প্রায় ৪০ গ্রাম সোনা এবং নগদ ১ লক্ষ টাকা ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, এরপর তারা বাথরুমে স্নান করে অন্য পোশাক পরে, রক্তমাখা পোশাক অপরাধস্থলে ফেলে পালিয়ে যায়।রেণু আগরওয়ালের মৃতদেহ এখন ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।অন্যদিকে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ দুইজনকে সন্দেহ করেছে। একজন রেণু আগরওয়ালের বাড়িতে কাজ করতেন এবং অন্যজন পাশের বাড়ির গৃহকর্মী। সিসিটিভি ফুটেজে, দু'জনকে ১৩ তলায় যেতে এবং বিকেল ৫ টা ২ মিনিটে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, এই দুই ব্যক্তি খুনটি ঘটিয়ে রাঁচিতে চলে গিয়েছেন। কারণ রেণু আগরওয়ালের বাড়িতে কাজ করা হর্ষ ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এবং প্রায় ১০ দিন আগে কলকাতার একটি জনশক্তি সংস্থার মাধ্যমে তাকে ভাড়া করা হয়েছিল। আর রৌশন ১৪ তলায় তাদের প্রতিবেশীর বাড়িতে কাজ করত। রৌশনের নিয়োগকর্তার একটি দুই চাকার গাড়িতে করে দুজনকে পালিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে।ইতিমধ্যে কুকাটপল্লি থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। জোরদার তদন্ত চলছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, ফরেনসিক প্রমাণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য খতিয়ে দেখছে।