তামিলনাড়ুর পর এবার মহারাষ্ট্র। দেশে ভাষা প্রতিবাদের পরিধি বাড়ছে। এই আবহে মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে সামান্য আসন নিয়ে বচসা মুহূর্তেই রূপ নিল ভয়াবহ ঝামেলায়।আর যার নেপথ্যে রয়েছে ভাষা বিতর্ক।‘মারাঠি শেখো, না হলে শহর ছাড়ো’, এমনই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফের উত্তাল হল মহারাষ্ট্র।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যেয় ট্রেনের এক মহিলা কামরায় এই অশান্তির সূত্রপাত।ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একসঙ্গে ৬-৭ জন মহিলা আসন নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। মুম্বই লোকালের মতো ভিড় ট্রেনে যা নতুন ঘটনা নয়। তবে সেই বচসার মধ্যেই এক মহিলা অপর এক যাত্রীকে মারাঠি না বলায় তীব্র আক্রমণ করেন। ওই মহিলা বলেন, 'আমাদের মুম্বইয়ে থাকতে হলে মারাঠি বলতেই হবে, নইলে এখান থেকে বেরিয়ে যান।' এরপরেই ট্রেনের অন্যান্য মহিলারাও তর্কে জড়িয়ে পড়েন।ফলে মুহূর্তের মধ্যে ভাষা ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা কামরায়। রেল আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স এবং গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ।
আরও পড়ুন-দীর্ঘ ২০ বছর কোমায়! চিরঘুমের দেশে সৌদির 'স্লিপিং প্রিন্স', শোকস্তব্ধ রাজপরিবার
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রজুড়ে ভাষা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। রাজ ঠাকরে নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার কর্মীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়ছেন। প্রবাসী ও অ- মারাঠিভাষাভাষী মানুষদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। এমন একাধিক ঝামেলার ঘটনা ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে।চলতি সপ্তাতের গোড়ায় মুম্বইয়ের ভিখরোলিতে এক দোকানদারকে মারধর করার অভিযোগ উঠে এমএনএস কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস মারাঠিভাষাভাষীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, প্রকাশ্যে তাঁকে জোর করে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হচ্ছে, সঙ্গে হুমকি ও শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ জুলাই থানেতে মারাঠি ভাষায় কথা না বলায় এক স্ট্রিট ফুড বিক্রেতাকে চড় মারার অভিযোগ উঠে এমএনএস কর্মীদের বিরুদ্ধে। একইভাবে পালঘর জেলায় এক পরিযায়ী অটোচালককে মারধর করার অভিয্যগ উঠেছে এমএনএস ও উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।এখানেই শেষ নয়।মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী সুশীল কেডিয়ার অফিসেও হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। কারণ, কেডিয়া প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তিনি মারাঠি শিখবেন না। হামলার ভিডিওয় দেখা যায়, ৫-৬ জন এমএনএস সমর্থক অফিসে ঢিল ছুঁড়ছেন। এক নিরাপত্তা কর্মী বাধা দিতে এগিয়ে এলেও ততক্ষণে তাঁরা ব্যাগ খালি করে ফেলেছেন। পরে ওই ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।
আরও পড়ুন-দীর্ঘ ২০ বছর কোমায়! চিরঘুমের দেশে সৌদির 'স্লিপিং প্রিন্স', শোকস্তব্ধ রাজপরিবার
সাম্প্রতিক সময়ে ভাষা বিতর্কে তোলপাড় মহারাষ্ট্র। মরাঠি ভাষায় কথা বলতে অস্বীকার করায় একের পর এক হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে।সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল, প্রাথমিক স্তরে হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে। পরে প্রবল বিরোধিতার মুখে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার। সেই ‘বিজয়’ উপলক্ষে ওরলিতে ‘আওয়াজ মারাঠিচা’ সমাবেশের আয়োজন করেছিল উদ্ধব এবং রাজের দল।