দেশের পরিযায়ী শ্রমিকদের যাত্রাপথ বিশ্লেষণ করে সদ্য প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ দুটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। একটি রিপোর্টে বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে রাজ্য ভিত্তিক পরিযায়ী শ্রমিকদের গতিবিধি। আরেকটি রিপোর্টে বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে, কীভাবে জেলা থেকে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মতো বড় মেট্রো শহরে কাজ করতে আসছেন। এক্ষেত্রে বেশ কিছু পন্থার সাহায্য নিয়ে রিপোর্টগুলি তৈরি হয়েছে। এদিকে, রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, রোজগারের সন্ধানে দেশের প্রায় অর্ধেক পরিযায়ী শ্রমিক যে ৫ টি রাজ্যকে গন্তব্য করে নিয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি পশ্চিমবঙ্গ।
কত নম্বরে পশ্চিমবঙ্গ?
প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের গন্তব্যের তালিকায় যে প্রথম ৫ রাজ্য রয়েছে, তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে উত্তর প্রদেশ। দ্বিতীয় স্থানে মহারাষ্ট্র। আর তৃতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গের পর রয়েছে রাজস্থান ও মহারাষ্ট্র। প্রধামন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের পরিষদের এই রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে বেশ কিছু পন্থার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। ইসরোর উপগ্রহের ছবি, অসংরক্ষিত কামরায় রেল যাতায়াত, এক রাজ্যের মোবাইলের সিম অন্য রাজ্যে ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য, ব্যাঙ্কের তথ্য, জমির চরিত্র বদল এই সমস্ত রকমের তথ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের গতিবিধি অনুধাবনের চেষ্টা করা হয়েছে। যাত্রা পথের বিশ্লেষণ বলছে, পছন্দের ৫ যাত্রাপথের মধ্যে বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসার তথ্য মিলেছে।
পরিসংখ্যান
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সালের শেষে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা দেশে ছিল ৪৫ কোটি ৫৭ লাখ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ২০ লাখ। ২০১১ শেষে দেখা গিয়েছে, জনসংখ্যার প্রায় ৩৮ শতাংশ ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে যেতেন। সেই ট্রেন্ডে কমতি এসেছে। ২০২৩ সালে সেই অঙ্ক কমে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভাগ হয়েছে ২৮.৮৮ শতাংশ। কেন এই কমতি? তারও উত্তর রয়েছে রিপোর্টে। কেন্দ্রীয় ওই রিপোর্টের পরিষদের সদস্য, অনুমান করা হচ্ছে, বাড়ির কাছাকাছি কাজের সুযোগ সহ অন্যান্য নানান পরিকাঠামোতে উন্নতি এর একটি কারণ হতে পারে। তাই জন্য নিজের বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই অন্যত্র যেতে চাইছেন না। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টার রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, কর্ণাটকে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। উল্লেখ্য, এর আগে, পরিযায়ী শ্রমিকদের পছন্দের রাজ্যের তালিকায় অন্ধ্রপ্রদেশও ছিল। তবে সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, অন্ধ্রপ্রদেশকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
জেলার মানুষের কলকাতা, হাওড়ায় আসা:-
অন্য রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০১১৯-২০র মধ্যে লোকাল ট্রেনে চেপে কলকাতায় আসার হার বিপুল বেড়েছিল। তবে কোভিড ও লকডাউনে তা পরে কমে যায়। ২০২৩ সালের রিপোর্ট বলছে, প্রাক কোভিডে যে পরিমাণ মানুষ কলকাতায় আসতেন লোকল ট্রেনে চড়ে, তার সংখ্যা ২০২৩ এর হিসাব অনুযায়ী ১৭ থেকে ২০ শতাংশ কমেছে। দুই ২৪ পরগনা থেকে আসা যাত্রীদের সংখ্য়া বাড়লেও হুগলি থেকে আসা যাত্রী সংখ্যা কমেছে।