গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও রক্তাক্ত হয়েছিল সন্ত্রাসবাদীদের হামলায়। পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে সেই নৃশংস হানায় ২৫ জন পর্যটক এবং ১ জন কাশ্মীরির মৃত্যুতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। ঠিক কীভাবে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা? কত জন জঙ্গি হামলা চালায়? গোয়েন্দাদের তদন্ত, প্রত্যক্ষদর্শী এবং ক্ষতিগ্রস্তদের বয়ানের ভিত্তিতে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
আরও পড়ুন-'কোন মুখে রাজ্যের মর্যাদা চাইব?' পহেলগাঁও হামলায় ক্ষমাপ্রার্থী কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুসারে, মোট ৪ জন জঙ্গি পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েছিল। হামলার আগে ২ জন বৈসরন উপত্যকার এন্ট্রি গেট দিয়ে ঢোকে। একজন এক্সিট গেটে দাঁড়িয়েছিল যাতে কেউ সেখান থেকে বেরোতে না পারে। আর অপর এক জঙ্গি 'মিনি সুইৎজারল্যান্ড' নামে পরিচিত বৈসরন উপত্যকা লাগোয়া জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল। গুলি চলা শুরু হওয়ার পর সে বেরোয়। মনে করা হচ্ছে, মাত্র তিনজন সন্দেহভাজন পর্যটকদের উপর গুলি চালিয়েছে। অর্থাৎ, পর্যটকদের ফাঁদে ফেলে ছক কষে খুন করেছে সন্ত্রাসবাদীরা। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, হামলাকারী জঙ্গিদের ২ জন সেনার পোশাক পরে এন্ট্রি গেটে ছিল। আর তৃতীয়জন ঐতিহ্যবাহী কাশ্মীরি পোশাক ফেরান পরে ছিল।
এক্সিট গেট
প্রথম এগজিট গেটে গুলি চালানো হয়েছিল। জঙ্গিদের গুলির শব্দ শুনে সেই সময় পর্যটকরা আতঙ্কে দৌড়ে এন্ট্রি গেটের দিকে যান। তবে সেখানেও ২ জঙ্গি ছিল। সেখানে অতর্কিতে হামলা চালায় তারা। এন্ট্রি গেটে জঙ্গিরা পর্যটকদের জড়ো করে এবং মহিলা-পুরুষদের থেকে আলাদা হতে বলে। কিন্তু, পর্যটকরা করতে অস্বীকার করেন। তারপর জঙ্গিরা ধর্ম পরিচয়ের ভিত্তিতে তাদের আলাদা হয়ে দাঁড়াতে বলে। কিন্তু ফের তা প্রত্যাখ্যান করে পর্যটকরা। এরপর জঙ্গিরা পর্যটকদের উপর গুলি চালানোর আগে কলমা পাঠ করতে বলে। বৈসরন উপত্যকার চায়ের দোকান এবং ভেলপুরি স্টল এলাকার কাছে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কারণ সেখানে সেই সময় বেশি পর্যটকের জমায়েত ছিল। হামলার পর সন্ত্রাসবাদীরা পার্কের বা দিকের দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন-'কোন মুখে রাজ্যের মর্যাদা চাইব?' পহেলগাঁও হামলায় ক্ষমাপ্রার্থী কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর
এনআইএ-র তদন্ত
পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।হামলার ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করতে বৈসরন উপত্যকায় যান এনআইএ-র ৬ অফিসার। বৈসরন পার্কে যাদের দোকান আছে এমন প্রায় ৪৫ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং অপারেটরদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।