চিনের অভিসন্ধি নিয়ে ভারতকে সতর্ক করলেন নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের প্রতিনিধি লবসাং সাংগে। তাঁর হুঁশিয়ারি, চিনের সম্প্রসারণবাদী মনোভাব এখনও শেষ হয়নি, অরুণাচল প্রদেশ তাদের পরবর্তী টার্গেট। চিনকে বিশ্বাস করা উচিত হবে না ভারতের।
তিব্বতি নেতার এই মন্তব্য এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন অরুণাচল প্রদেশের ২৭ টি জায়গার নতুন নামকরণ করেছে চিন। শুধু তাই নয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণ এবং ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করে চলেছে বেজিং। এনডিটিভিকে ভারতে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের ‘সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর প্রেসিডেন্ট লবসাং সাংগে বলেন, '১৯৫৪ সালে চিনের সঙ্গে ভারতের পঞ্চশীল চুক্তি হয়, এবং ১৯৬২ সালে দু'দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে যখন অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতের বিদেশমন্ত্রী হিসেবে চিন সফর করেন, তখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলছিল। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৫ সালে ভারতে আসেন এবং তার দুই বছরের মধ্যে ডোকলামের ঘটনা ঘটে। ২০১৯ সালে ভারত ও চিন ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করে, তারপরেই ২০২০ সালে গালওয়ানে প্রবেশ করে চিনা সেনা।'
আরও পড়ুন-'ভারত-US সম্পর্ক অত্যন্ত...,' ফের কাছাকাছি নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন? বিশেষ ইঙ্গিত রুবিও-র
তিনি চিনের উপর ভারতের আস্থা রাখার দৃঢ়তাকে 'ধ্বংসাত্মক সম্পর্কে'র সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিব্বতি নেতা বলেন, 'দুবার ব্রেকআপের পর, যুগলরাও হাল ছেড়ে দেয়। কিন্তু ১৪ বার বিশ্বাসঘাতকতার পরও ভারত বারবার চিনের কাছে ফিরে যায়। তোমার হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, কিন্তু তুমি এখনও স্কচ টেপ দিয়ে আটকে রেখেছো।' তিনি দাবি করেছেন, চিন অরুণাচল প্রদেশ জুড়ে রেল লাইন, সড়ক এবং সামরিক বিমানঘাঁটি তৈরি করছে। তারা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেজিংয়ের কাছে তিব্বত হল হাতের তালু, এবং পাঁচ আঙুল হল লাদাখ, নেপাল, ভুটান, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ। তারা ইতিমধ্যেই তিব্বত দখল করেছে। এখন পাঁচ আঙুল দখলের জন্য এগিয়ে আসছে, কারণ হিমালয় নিয়ন্ত্রণ করার অর্থ দক্ষিণ এশিয়ায় এবং ভারতে আধিপত্য বিস্তার করা।' ভারত সরকারকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, 'পারস্পরিক বিশ্বাসের জন্য আন্তরিকতার প্রয়োজন। কিন্তু ভারত যখন শান্তির কথা বলে, তখন চিন দুই ধাপ এগিয়ে সীমান্তে ৩০০টি গ্রাম তৈরি করছে, এলএসি-এর ভেতরে প্রবেশ করছে এবং ডোকলামে হেলিপ্যাড ও সামরিক ক্যাম্প তৈরি করছে। তারা মুখে 'হিন্দি-চিনি ভাই ভাই' বলে, কিন্তু প্রতিবারই তারা ভারতের পিঠে ছুরি মারে।'
আরও পড়ুন-'ভারত-US সম্পর্ক অত্যন্ত...,' ফের কাছাকাছি নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন? বিশেষ ইঙ্গিত রুবিও-র
তাঁর মতে, 'চিনের লক্ষ্য স্পষ্ট-আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তার। বিশ্বের এক নম্বর হতে হলে, চিনকে প্রথমে এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করতে হবে। এবং তা করতে হলে, তাদের ভারতকে তার জায়গায় দৃঢ়ভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে তারা কখনও প্রতিযোগিতা করতে না পারে। তাই ভারতকে বন্ধুত্বের ভ্রম ত্যাগ করতে হবে। প্রতিবার ভারত যখন 'হিন্দি-চিনি ভাই ভাই' বলে, তখন বিশ্বাসঘাতকতা দিয়ে শেষ হয়। আপনি কতবার আপনার হৃদয় ভাঙতে চান?'