হায়দরাবাদ এনকাউন্টারে মৃত চার অভিযুক্তের দেহের পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটার মধ্যে দিল্লি এইমসের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
প্রধান বিচারপতির রাঘবেন্দ্র সিং চৌহানের ও বিচারপতি অভিষের রেড্ডি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়, 'বন্ধ খামে ময়মাতদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ময়নাতদন্তের পর (অভিযুক্তদের) পরিবারের হাতে দেহ তুলে দিতে হবে।'
আদালতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন স্বাস্থ্য দফতরের মুখ্যসচিব। ময়নাতদন্তের স্বার্থে দিল্লি এইমসের অধিকর্তার কাছে তিন সদস্যের একটি দল গঠনের জন্য তাঁকে আর্জি জানানোর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
গত ২৮ নভেম্বর শামশাবাদের আউটার রিং রোডের আন্ডারপাসের ওইতরুণীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল। তদন্তে জানা যায়,আগের রাতে শামশাবাদ টোল প্লাজার কাছে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করে ওই চার অভিযুক্ত। পরে ওই ব্রিজের কাছে তাঁর দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরইমধ্যে ৬ ডিসেম্বর ভোরে পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় অভিযুক্ত চারজনের। পুলিশ দাবি করে, ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে তাদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে তারা। পুলিশ অভিযুক্তদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। পালটা গুলি চালালে মৃত্যু হয় অভিযুক্তদের।
যদিও এনকাউন্টারের আইনি বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় মৃতদের ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্। শেষকৃত্যেও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সেইমতো মহাবুবনগর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। তারপর থেকে গান্ধী হাসপাতালে দেহগুলি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
আজ সকালে হাসপাতালের সুপার পি শ্রাবন কুমার হাইকোর্টে জানান, মাইনাস ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখা হলেও দেহগুলিতে ৫০ শতাংশ পচন ধরেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে দেহে পুরো পচন ধরে যাবে। তাই দেহ দ্রুত পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, আর ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই। তা অবশ্য নাকচ করে দেয় হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কোনও সন্দেহ দূর করতে দিল্লির চিকিৎসকদের দিয়ে একটি পরীক্ষা করা প্রয়োজনীয়। এছাড়াও, এনকাউন্টারে ব্যবহৃত অস্ত্র ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবে পাঠানোর বিষয়টি রাজ্যকে নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।