নির্বাচন কমিশনের উপর দেশের রাজনৈতিক দলগুলির বিশ্বাসের ঘাটতির ঘটনা ‘দুর্ভাগ্যজনক।' বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) মামলায় মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের পরে নতুন খসড়া ভোটার তালিকার ক্ষেত্রে আপত্তি জানানোর সময়সীমা বাড়িয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ জানিয়েছে, ভোটমুখী বিহারে এসআইআর নিয়ে বিভ্রান্তির পেছনে মূল সমস্যা হল 'বিশ্বাসের অভাব।' সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বিহার লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি যেন প্যারা-লিগ্যাল স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে যাতে ভোটাররা এবং রাজনৈতিক দলগুলি আবেদন ও আপত্তি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা পায়।এদিন শীর্ষ আদালত জানায়, 'বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের বিষয়টি নিয়ে যে সন্দেহ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা অনেকাংশেই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতির ফল। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলিকে নিজ নিজভাবে সক্রিয় হয়ে ভোটারদের সাহায্য করা উচিত।'
আরও পড়ুন-পর্যটন কেন্দ্র গাজা! যুদ্ধ-পরবর্তী বড় পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের, চাঞ্চল্যকর Report
এদিন বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, 'আমরা এ নিয়ে আগেই নির্দেশ দিয়ে রেখেছি। যদি নির্বাচন কমিশন এই তিন লক্ষ বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে আধার গ্রহণ না করে, তাহলে আমাদের জানাবেন। আমরা তো আছিই।' শীর্ষ আদালতের নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ৩০ সেপ্টেম্বরের পরও আবেদন করতে পারবেন ভোটাররা। তাঁদের নাম ১ অক্টোবরের তালিকায় না থাকলেও, নির্বাচনের নমিনেশনের প্রথম দিন পর্যন্ত যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের নথি যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকায় সেটা প্রকাশ করা হবে। অন্যদিকে এদিন আবেদনকারীদের তরফে অভিযোগ করা হয়, নাম যুক্ত করার জন্য ফর্ম-৬-এ আবেদন করতে হচ্ছে। যার ফলে পুরনো ভোটাররাও নতুন ভোটার হিসেবে নাম তুলে ফেলছেন। ২২ আগস্টের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পর তাই ১৫ লক্ষ নতুন ভোটারের নাম যুক্ত হওয়ার আবেদন জমা পড়েছে। আদতে তাঁদের বেশিরভাগই পুরনো ভোটার লিস্টে বাদ যাওয়া ভোটার।এই দাবি অবশ্য মানেনি নির্বাচন কমিশন। তাঁদের দাবি ২.৭ লক্ষ নাম জমা পড়েছে স্রেফ বাদ দেওয়ার জন্য আর নথিভুক্তকরণের জন্য ৩৩ হাজারের কিছু বেশি নাম দেওয়া হয়েছে তাঁদের কাছে।
আরও পড়ুন-পর্যটন কেন্দ্র গাজা! যুদ্ধ-পরবর্তী বড় পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের, চাঞ্চল্যকর Report
এই অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, স্টেট লিগাল এইডস ফোরামের চেয়ারম্যান সব জেলায় প্যারালিগাল ভলান্টিয়ার নিয়োগ করবেন ভোটার এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে নাম অন্তর্ভুক্তি/বাদ দেওয়ার আবেদন করার জন্য। এবং এই প্যারা লিগালরা একটি গোপন রিপোর্ট জমা দেবেন জেলার লিগাল এইড চেয়ারম্যানকে। সেই রিপোর্ট একত্রিত করবে রাজ্যের সিগাল এইড সেল।অর্থাৎ, নির্বাচন কমিশন বা রাজনৈতিক দল— কারও দাবিই চোখ বন্ধ করে না মেনে নিয়ে এবার বিহারে নিজের চোখ আর কান মোতায়েন করল শীর্ষ আদালত। সব রাজনৈতিক দলকে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে আদালতের তরফে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৮ সেপ্টেম্বর।